ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম স্টকহোম৷ সুয়েডীয় সুইডেনের রাষ্ট্রভাষা৷ রাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বদিকে রয়েছে ফিনল্যান্ড, পশ্চিমদিকে নরওয়ে ও দক্ষিণ-পশ্চিমদিকে ওরেসুন্দ সেতু যেটা দিয়ে ডেনমার্ক যাওয়া যায়। সুইডেন স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশেগুলোর বৃহত্তম রাষ্ট্র।
ইডেনের জনসংখ্যার প্রায় ৮৫% শহরকেন্দ্রিক এবং দেশের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত শহরসমূহে বসবাস করে। ঊনবিংশ শতক থেকেই সুইডেন একটি শান্তিপূর্ন দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান বজায় রেখেছে এবং কোন প্রকার যুদ্ধে জড়ানো থেকে বিরত থেকেছে।
বর্তমান বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা এই দেশটি শিক্ষা কার্যক্রমেও বিশ্বে অন্যতম। অাধুনিক গবেষণা, শিক্ষার মান, আকর্ষণীয় বৃত্তি ইত্যাদি সুযোগের কারণে ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের তালিকায় এই দেশটি একেবারে শীর্ষে।
১. পড়াশোনার বিষয়: এ দেশটিতে যে সকল বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে সেগুলো হলো- পরিবেশ বিজ্ঞান, ভাষা শিক্ষা, কৃষি গবেষণা ও ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ, টেলিকমিউনিকেশন, আইন, গণিত, জনস্বাস্থ্য, আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন, মেডিকেল, অর্থনীতি, ভূগোল, হিউম্যান রিসোর্স, হেলথ কেয়ার ম্যানেজমেন্ট, ফিল্ম ও মিডিয়া, লাইফ সায়েন্স ইত্যাদি।
২. বিশ্ববিদ্যালয় ও টিউশন ফি: সুইডেনে বেশ কয়েকটি বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যার প্রায় সবগুলোই ঐ দেশীয় সরকারি তহবিলে পরিচালিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৩ বছর মেয়াদী ব্যাচেলর, ২ বছর মেয়াদী মাস্টার এবং পিএইচডি করার সুযোগ আছে। সুইডেনের শিক্ষাব্যবস্থা সব স্তরেই অনেকটা গবেষণানির্ভর। আর এ কারণেই সারা বিশ্বের ছাত্রছাত্রীদের কাছে এর চাহিদাও অনেক বেশি। এখানে ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য ১২ বছরের শিক্ষা যোগ্যতা এবং মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ১৬ বছরের শিক্ষা যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় এখানে টিউশন ফি অনেক কম। তবে এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে।
স্কলারশিপের সুযোগ: সুইডেনে বেশ কয়েকটি স্কলারশিপ প্রচলিত আছে। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো;
ক) সুইডিশ ইন্সটিটিউট স্টাডি স্কলারশিপ: ওইসিডি/ডিএসি অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটি একটি ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ। স্কলারশিপপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের টিউশন ফি, আবাসিক খরচ, খাবারের খরচ, যাতায়াতের যাবতীয় খরচ সুইডিশ সরকার বহন করে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। https://eng.si.se/scholarship/the-swedish-institute-study-scholarships/
খ) সুইডিশ-তুর্কিশ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম: এটা তুর্কি থেকে নির্ধারিত মাস্টার ডিগ্রি প্রোগ্রামের জন্য একটি ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। https://eng.si.se/scholarship/swedish-turkish-scholarship-programme-masters-level-studies/
গ) সুইডিশ ইন্সটিটিউট স্কলারশিপ ফর দ্য ওয়েস্টার্ন বলকানস্: পশ্চিম বলকানভিত্তিক সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের উপরে পিএইডডি কিংবা পোস্ট ডক্টরাল গবেষণার জন্য এই বৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে। এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। https://studyinsweden.se/scholarships/
এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ, স্কলারশিপ কমপিটিশনসহ অন্যান্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রায় প্রতিটি ইউনিভার্সিটিতে টিউশন ফি এর উপর মেধার ভিত্তিতে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য ২৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। অন্যদিকে Lund 350 Jubilee Scholarship: A global Competition এ অংশগ্রহণ করে একজন শিক্ষার্থী টিউশন ফি এর উপরে ১০০ ভাগ পর্যন্তও স্কলারশিপ পেতে পারে। বিস্তারিত এখানে। http://www.lund350scholarship.com/
পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির সুযোগ: সুইডেনে পড়াশোনা করার পাশাপাশি চাকরি করার সময়ের কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। এখানে সবার জন্যই যত সময় খুশি চাকরি করার সুযোগ আছে। স্পাউজ অ্যাপ্লিকেশনের সুযোগও আছে। এমনকি অ্যাপ্লিকেন্ট এর ছেলেমেয়েরও ফ্রি তে পড়াশোনা করারও সুযোগ রয়েছে। অ্যাপ্লিকেন্ট চাইলে পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসাও করতে পারবেন। পড়াশোনা শেষে ৬ মাসের চাকরি খোঁজার সুযোগ আছে। কেউ চাইলে যে বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন সে বিষয়ের বাইরেও চাকরি করতে পারবেন। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার ৪ বছর পরে পিআর- এ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। সুইডেনে পিআর পাওয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি সহজ।
আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়:
১. এসএসসি এবং এইচএসসি তে কমপক্ষে জিপিএ ৩.০০ থাকতে হবে।
২. ব্যাচেলরে কমপক্ষে ৩.০০ থাকতে হবে।
৩. ব্যাচেলর/মাস্টার ডিগ্রি এবং এমবিএ এর জন্য আইইএলটিএস স্কোর ৬.৫ থাকতে হবে।
আবেদনের সময়: সুইডেনে বছরে দুটি সেমিস্টার রয়েছে। একটির মেয়াদ আগস্টের শেষ থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত এবং অপরটি মধ্য জানুয়ারি থেকে জুনের শুরু পর্যন্ত। বর্তমানে অটাম- ২০১৮ (আগস্ট-২০১৮) সেশনের সময়সীমা ১৬ অক্টোবর ২০১৭ থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত।
সূত্র: ডিএনএন