কোনো স্থাপনা নির্মাণের আগে প্রয়োজন নকশা। আর সে নকশা করেন স্থপতি। একজন স্থপতিই নিশ্চিত করেন স্থাপনাটি পরিবেশসম্মত, ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ। স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে হবু স্থপতিকে দুনিয়ার তাবৎ জিনিস সম্পর্কে জানাশোনা থাকতে হবে। যেকোনো স্থাপনা যেন খুব সহজেই আমাদের চোখে আঁচড় কাটে তার জন্য শিক্ষার্থীর শিল্পকলা, নন্দনতত্ত্ব ও উদ্ভাবন-সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে হবে শিক্ষাজীবন থেকেই। দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্থাপত্য বিষয়ে ব্যাচেলর ইন আর্কিটেকচার ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
ভর্তির যোগ্যতা:
স্থাপত্য বিভাগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় যাঁরা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন, তাঁদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ মান অনুসারে প্রতিবছর একবার ভর্তি করানো হয়। আর্কিটেকচার বা স্থাপত্য বিভাগে ভর্তির পরীক্ষার জন্য অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তহস্ত অঙ্কন পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
ভর্তি পরীক্ষায় একই সঙ্গে প্রকৌশল ও স্থাপত্যে তত্ত্বীয় ও মুক্তহস্ত অঙ্কন পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)
১৯৬৫ সালে এই বিভাগ থেকে প্রথম ব্যাচে পাঁচজন শিক্ষার্থী ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৯ সালে এই বিভাগে মাস্টার্স ডিগ্রি ও ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান শুরু হয়।
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় গ্রুপ খ-তে স্থাপত্য বিভাগে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় গণিত, পদার্থ, রসায়ন ও ইংরেজি বিষয়ে জিপি ৫.০০ পাওয়া শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন। ৬০০ নম্বরের তত্ত্বীয় ও ৪০০ নম্বরের মুক্তহস্ত অঙ্কন পরীক্ষা দুটি একই দিনে অনুষ্ঠিত হয়। বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগে আসন সংখ্যা ৫৫। বিস্তারিত জানা যাবে: www.buet.ac.bd/arch
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৯১ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পাঁচ বছরের স্নাতক ডিগ্রিতে সর্বমোট ৩৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারেন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ এইচএসসি শিক্ষার্থীরা যাঁদের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে জিপি ৩.৫ ও ইংরেজিতে ৩ রয়েছে, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন। আসন সংখ্যা ৩৫। বিস্তারিত জনা যাবে: www.arch.ku.ac.bd
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) রয়েছে স্থাপত্য বিষয়ে পড়ার সুযোগ। প্রতিবছর ৩০ জন শিক্ষার্থী এই বিভাগে ভর্তি হয়ে থাকেন। চুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় খ-গ্রুপ থেকে স্থাপত্য বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতিতে ৫-এর স্কেলে কমপক্ষে জিপিএ ৪.০০ (চতুর্থ বিষয় বাদে)সহ গণিত, পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ে কমপক্ষে গড় গ্রেড পয়েন্ট ১৩ ও প্রতিটি বিষয়ে আলাদাভাবে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। আসন সংখ্যা ৩০। চুয়েট: www.cuet.ac.bd/dep_arch.php
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৫ সালে স্কুল অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের আওতায় স্থাপত্য বিভাগ চালু হয়। বি ইউনিট থেকে এই বিভাগে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন। আসন সংখ্যা ৩০। বিস্তারিত: www.sust.edu/departments/arc
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
বতর্মানে দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও স্থাপত্য বিভাগে গ্র্যাজুয়েশন করার সুযোগ আছে। আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সেমিস্টারে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
ওয়েবসাইট:
আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: www.aust.edu/barch/
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়: www.bracuniversity.net/
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়: www.northsouth.edu/html/
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক: www.uap-bd.edu/arch/faculties.html
(কৃতজ্ঞতা – প্রথম আলো)