সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নির্বাচন ও আসন বিন্যাস প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনে কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, প্রথমবারের মতো রেকর্ড সংখ্যাক প্রার্থীর আবেদন হওয়ায় নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা নিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এ কারণে প্রশ্নফাঁস রোধ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অক্টোবরে পরীক্ষার আয়োজন হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে নভেম্বরে নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জানা গেছে, সভায় পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো, নিয়োগ পরীক্ষার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও মূল্যায়ন, পরীক্ষার সময়সূচি, ফলাফল প্রক্রিয়াকরণ ও প্রকাশ এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের আসন বিন্যাসের পদ্ধতি উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা হলেও পরীক্ষা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয়নি।
তথ্যমতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট নিরসনে রাজস্ব খাত ভুক্ত ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গত ৩০ জুলাই ‘সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০১৮’ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
গত ১-৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। সারাদেশ থেকে মোট ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭টি আবেদন এসেছে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এফ এম মনজুর কাদির জাগো নিউজকে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সভায় সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেহেতু এবার ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৪ লাখের বেশি প্রার্থী আবেদন করেছে, সেহেতু আমাদের বড় ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন রয়েছে।
এবার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নির্বাচন ও আসন বিন্যাস মন্ত্রণালয় থেকে করা হবে। আগে এটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়াতে এবার উপজেলা সদরের পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কেন্দ্র নিশ্চিতকরণের দায়িত্ব প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে দেয়া হয়েছে। তারা প্রতিটি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্র বৃদ্ধি ও পরীক্ষা আয়োজনের জন্য সময় নির্ধারণ করবে।
এরপর নিয়োগ পরীক্ষার সময় ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে যদি সকল জেলায় একসঙ্গে কেন্দ্র খালি না পাওয়া যায় তবে, কয়েকটি জেলায় সমন্বয় করে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হতে পারে বলেও জানান মনজুর কাদির।
তিনি আরো বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো, নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ পূর্বের ক্রটি-বিচ্যুতিগুলো সংশোধন করে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হবে। এ কারণে অক্টোবরে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাবনা থাকলেও তা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। আগের পদ্ধতিতেই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, সর্বশেষ ‘শিক্ষক নিয়োগ-২০১৪’ এ প্রায় ১২ লাখ প্রার্থীর বহুনির্বাচনী পরীক্ষা সারাদেশে ৩ হাজার ৬৬২টি কেন্দ্রে আয়োজন করা হয়। এবার দ্বিগুণ আবেদন আসায় পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এ পরীক্ষার জন্য ২০টি প্রশ্ন সেট তৈরি করা হলেও এবার তা বাড়ানো হতে পারে। মন্ত্রণালয়ের সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্র জানায়, বর্তমানে সারাদেশে ৬৪ হাজার ৮২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। এ কারণে নতুন করে আরও ১২ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পুরনো নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়।