নতুন বেতন স্কেল সংশোধন করে চলতি অর্থবছর সবাইকে ইনক্রিমেন্ট বা বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির সুবিধা দেওয়ার গেজেট জারি করেছে সরকার। গতকাল বুধবার জারি করা ওই গেজেটে বলা হয়েছে, গত ১ জুলাই থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ইনক্রিমেন্ট পেয়েছেন, তাঁদের ইনক্রিমেন্ট গত ১৫ ডিসেম্বর পেয়েছেন বলে গণ্য হবে। আর গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাঁদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা ছিল, তাঁদের ইনক্রিমেন্টও গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে। সবার ইনক্রিমেন্ট ১৫ ডিসেম্বর তারিখে কার্যকর করা হলেও ১ জুলাই থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ইনক্রিমেন্ট সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের কোনো অর্থ ফেরত দিতে হবে না।
গত ১৪ ডিসেম্বর জারি করা নতুন বেতন কাঠামোতে ওই দিন পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট সুবিধা বহাল রাখা হয়। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারি চাকরিজীবী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরতরা ইনক্রিমেন্ট সুবিধা পান। তবে নতুন বেতন কাঠামোয় বলা ছিল, ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ১ জুলাই পর্যন্ত যাঁদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, তাঁরা এ সুবিধা পাবেন না। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম দিন, অর্থাৎ ১ জুলাই সবাইকে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হবে। ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের অর্ধেক কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি ইনক্রিমেন্ট থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে অনেক সিনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারী পরে যোগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চেয়ে বেতন-ভাতায় জুনিয়র হয়ে যাচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে এক ধরনের ক্ষোভ ছিল প্রশাসনে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এটি সংশোধন করে সবাইকে ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী অর্থবছরের ১ জুলাই আবার সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ইনক্রিমেন্ট পাবেন।
অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু তাহের স্বাক্ষরিত গেজেটে বলা হয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর একই দিনে সবার জন্য চলতি অর্থবছরের ইনক্রিমেন্ট কার্যকর করা হলেও গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা ইনক্রিমেন্ট পেয়ে অর্থ উত্তোলন করেছেন, তাঁদের সে অর্থ আর ফেরত দিতে হবে না। এই সময়ের মধ্যে যাঁরা ইনক্রিমেন্ট সুবিধা পেয়েছেন, কিন্তু এখনো ইনক্রিমেন্টের অর্থ উত্তোলন করেননি, তাঁদের কাছ থেকেও অর্থ কর্তন করা হবে না। গেজেটটি নতুন বেতন কাঠামোর মতোই গত বছরের ১ জুলাই থেকে কার্যকর বলে গণ্য হবে।
নতুন বেতন কাঠামোয় বলা ছিল, স্বামী-স্ত্রী সরকারি বা স্বশাসিত সংস্থা, ব্যাংক, বীমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী হলে, তাঁরা একত্রে সরকারি বাসস্থানে বসবাস করলে, বাসস্থানটি যাঁর নামে বরাদ্দ, তাঁর বেতনের বাড়িভাড়া ভাতা থেকে বাড়িভাড়া বিল কেটে নেওয়া হবে।
এতে সংশোধন এনে নতুন গেজেটে বলা হয়েছে, ‘যদি স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই কোন সরকারি বা স্ব-শাসিত সংস্থা, ব্যাংক, বীমা বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী হন এবং তাঁহারা একত্রে সরকারি বাসস্থানে বসবাস করেন, তাহা হইলে তাঁহাদের মধ্যে যাঁহার নামে বাসস্থান বরাদ্দ রহিয়াছ, তিনি কোন বাড়িভাড়া ভাতা প্রাপ্য হইবেন না; অপরজন (স্বামী বা স্ত্রী) প্রচলিত বিধান মোতাবেক পূর্ববৎ বাড়িভাড়া ভাতা প্রাপ্য হইবেন।’
সূত্র: কালের কণ্ঠ