নতুন বেতন কাঠামোতে কিছুটা পরিবর্তন আনায় পরিস্থিতি বদল হচ্ছে অর্ধেক সরকারি চাকরিজীবীদের। একই পদে আগে যোগ দিয়েও পরে যোগ দেয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর চেয়ে আর জুনিয়র থাকতে হবে না তাদের। কারণ গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট (বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি) পাওয়ার কথা, তারা ইনক্রিমেন্ট পাবেন।
নতুন বেতন কাঠামোর গেজেটে তাদের ইনক্রিমেন্ট বাতিল করার কথা বলা হলেও এখন নতুন করে আদেশ জারি করে তাদের ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। আর নতুন কাঠামো অনুযায়ী, আগামী অর্থবছর থেকে ইনক্রিমেন্ট যার যেদিনই পাওয়ার কথা হোক না কেন, সবাই একসঙ্গে ১ জুলাই তারিখে পাবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, সরকার তাদের ইনক্রিমেন্ট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ চূড়ান্ত করে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে অর্থ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে গেজেট জারি করবে অর্থ বিভাগ।
সরকারি চাকরিতে যিনি যেদিন যোগ দেন, প্রতিবছর ওই দিন তিনি একটি করে ইনক্রিমেন্ট পান। চলতি অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে গত ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা ছিল, সবাই পেয়েছেন। কিন্তু নতুন বেতন কাঠামোতে বলা হয়েছে, গত ১৪ ডিসেম্বরের পর থেকে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যাদের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার কথা, তারা আর ইনক্রিমেন্ট পাবেন না। যারা ইনক্রিমেন্ট পেয়েছেন, আর যারা পাবেন না, তাদের সবাইকে আগামী বছর থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই ইনক্রিমেন্ট দেয়া হবে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের কারণে চাকরিজীবীদের প্রায় অর্ধেক ইনক্রিমেন্টবঞ্চিত হন। ফলে একই পদে বছরখানেক পরে যোগ দিয়েও অনেক জুনিয়র কর্মকর্তা-কর্মচারী এক বছর আগে যোগ দেয়া সিনিয়রদের চেয়ে বেতন-ভাতায় সিনিয়র হয়ে যান। এর পর থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ সমস্যা দূর করার উদ্যোগ নেয়।
অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, সরকার আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সবাইকে ইনক্রিমেন্ট দেয়ার পর প্রতিবছর একই দিনে সবার ইনক্রিমেন্ট দেয়ার প্রথা চালু করবে। এর অংশ হিসেবে আগামী ১ জুলাই সব চাকরিজীবী একটি করে ইনক্রিমেন্ট পাবেন। এতে চাকরিজীবীদের মধ্যে বৈষম্য দূর হবে। তবে একই বছরের জন্য দুটি ইনক্রিমেন্ট দিতে গিয়ে সরকারের বাড়তি খরচ হবে ৯০০ কোটি টাকা।