দিনের মধ্যে মোটামুটি আঠার ঘন্টা সময় পাই আমরা। দাঁত ব্রাশ, বাথরুম, খাওয়া-দাওয়া, জিরো ফেইসবুক, ফোন, আড্ডা, রিক্সা/বাস, ক্লাস/অফিস, সব মিলিয়ে মোটামুটি বিশটা ছোটখাটো কাজ করে ফেলি প্রতিদিন। কিন্তু এর মধ্যে যে কাজগুলা করা উচিত না, সেগুলাই বেশি বেশি করে ফেলি। আর যে কাজটা করা উচিত বলে মনে হয়, সেটা করার টাইম কখনোই খুঁজে পাই না। আসলে, আমাদের সমস্যাটা কোথায়?
সমস্যা নাম্বার ওয়ান। যে কাজগুলা করা উচিত বলে মনে হয় সেগুলা বেশ লম্বা লম্বা। আমরা বড় বিজনেসম্যান, ভালো প্রোগ্রামার, সেরা ফটোগ্রাফার, মাল্টি ন্যাশনালের ম্যানেজার হইতে চাই। এই উঁচা লম্বা স্বপ্নগুলা, প্রতিদিনের বিশ-পঁচিশ মিনিট বা এক-দেড় ঘন্টার টাইম স্লটের মধ্যে ফিট খায় না। তাই যেগুলা ফিট খায় সেগুলাই ঘুরে ফিরে করে ফেলি।
মূলত, লম্বা চওড়া স্বপ্ন দেখা সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে, বিরাট বিরাট স্বপ্ন থেকে বিশ-পঁচিশ মিনিটে করে ফেলা যায় এমন ছোটখাটো খুচরা কাজ বের করতে না পারাটা। যেমন, কেউ পাইথনে প্রোগ্রামিং শিখতে চাইলে, পাইথন শিখার টাইম ছয় মাসেও বের করতে পারে না।
তবে, আজকে শুধু পাইথনে ভেরিয়েবল ডিক্লেয়ার করার সিস্টেমটা গুগল করে দেখার জন্য পনের-বিশ মিনিট সময় সহজেই বের করে ফেলতে পারবে। সো, থিঙ্ক স্মল। বি স্পেসিফিক। এইভাবে টানা কয়েকদিন আধা ঘন্টা করে করে, হাটি হাটি পা ফেলে আগাইতে পারলে, কয়েকদিন পরে দেখবেন বেশ খানিকটা পথ অতিক্রম করে ফেলছেন। তখন নিজের ভিতরে কনফিডেন্স আসবে। নরম পায়ে জোরসে দৌড় দেয়ার সাহস আসবে।
সমস্যা নাম্বার টু। আমাদের সেকেন্ড সমস্যাটা হচ্ছে, প্রথম সমস্যা এবং তার সমাধান জেনেও, সেটা ফলো না করা। ঢিলামি আর ফাঁকিবাজি করে, আলতু-ফালতু কাজে, প্রতিদিন চার-পাঁচটা আধা ঘন্টা সময় অপচয় করেও, নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য একটা বিশ-পঁচিশ মিনিটের স্লট খুঁজে বের করতে পারি না।
তবে, ঐ আশা কইরেন না যে, একদিন আচমকা ঘুম থেকে উঠে দেখবেন, আলাদীন আঙ্কেল চেরাগ দিয়ে গেছেন। বরং নিজের ভিতরের ইচ্ছাটাকে পাকাপোক্ত করেন। নিজেই নিজেকে কঠিন ডেডলাইন দেন। আধা ঘন্টা না পারলে, অন্তত পনের মিনিট সময় বের করেন। টার্গেটে পৌঁছানোর রাস্তা বা সময় পরিবর্তিত হইলেও লাইনে থাকবে হবে। প্রতিদিন। প্রতিটা দিন।