‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর সেকেন্ডারি এডুকেশন’ এর নামে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অভিনব প্রতারণা শুরু করেছে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তারা শিক্ষার্থীদের ‘আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মসুচি’র কথা বলে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে চিঠি পাঠাচ্ছে। ওই চিঠিতে কয়েকটি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
ছাত্রছাত্রীরা যোগাযোগ করলে তাদের জানানো হয়, তারা ঘরে বসে মাসিক ৪শ টাকা করে সহায়তা পাবেন। এজন্য তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ৫০ টাকা ‘বিকাশ’ করে পাঠাতে হবে।
রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল, ভিকারুন নিসা নূন স্কুলসহ সারাদেশের প্রায় তিন হাজার স্কুলে এমন চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে সই করেছেন তথাকথিত ‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট প্রোগ্রাম ফর সেকেন্ডারি এডুকেশন’-এর পরিচালক প্রফেসর এন এম এস উদ্দিন। তার স্বাক্ষরে সরকারি চিঠির মতো সরকারি মনোগ্রাম ব্যবহার করে এ ভুয়া চিঠি পাঠানো হচ্ছে। এ ভুয়া চিঠিতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্যও ৩০ হাজার করে টাকা বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রতারক চক্র তাদের অফিসের ঠিকানা হিসেবে ৩/খ/৪-পরীবাগ, নকশী স্টোর, ঢাকা’ উল্লেখ করেছে। চিঠিতে দেয়া মোবাইল নম্বরগুলো হলো- ০১৮৬৮০৬২৮২১-২৩, ০১৬২৫১১৬৮৫০-৫৫,০১৬২৫১১৬৮৬৫।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে পরীবাগে ওই হোল্ডিং নম্বরের কোনো অস্তিত্ব মেলেনি। বিকাশের মাধ্যমে টাকা চাওয়া ওই মোবাইল নম্বরগুলোতে বার বার ফোন করা হলেও কেউ ধরেননি।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতারণার শিকার হওয়া অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদেরকে মাসিক ৪শ টাকা হারে অর্থ সহায়তা দেয়ার কথা বলে ৫০ টাকার রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ‘বিকাশ’ করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভুয়া চিঠি পাঠাচ্ছে। এটি একটি প্রতারণার উদ্যোগ।’
মন্ত্রণালয়ের ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘সবাই অবগত আছেন যে, সরকারি কোনো সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কখনো কোনো অর্থ চাওয়া করা হয় না। এ ধরণের অপতৎপরতা থেকে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
সূত্র: সমকাল