দুর্গম এলাকার প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার প্রধান কারণ দারিদ্র্য। সরকারি হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার ২০ দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও বেসরকারি হিসাবে এ হার আরেকটু বেশি। তবে ঝরে পড়াদের ৮০ শতাংশের পরিবারই শিক্ষার ব্যয় বহনে অক্ষম। এছাড়া অজ্ঞতা, পরিবারের উপার্জনে সাহায্য করা, পড়তে আগ্রহী না হওয়া, কাজ করতে বাধ্য হওয়াসহ কিছু কারণে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শিশুরা ঝরে পড়ে। আর সবচেয়ে বেশি ঝরে পড়ে দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণীর শিশু।
মঙ্গলবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘দুর্গম এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অন্তরায়’ শীর্ষক সেমিনারে ব্র্যাকের গবেষণার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণার ফল তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানউল্লাহ। সিলেটের গুয়াইনঘাট ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ২ হাজার ৯০টি পরিবারের ওপর জরিপ করে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ব্র্যাকের অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ বিভাগ এ সেমিনারের আয়োজন করে।
গবেষণায় বলা হয়, তিন সদস্যের পরিবারের শিশুদের ঝরে পড়ার হার ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, চার থেকে পাঁচ সদস্যের পরিবারের শিশুদের ঝরে পড়ার হার ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ছয় থেকে সাত সদস্যের পরিবারের শিশুদের ঝরে পড়ার হার ৪০ দশমিক ১ শতাংশ। ঝরে পড়া ছেলে শিশুদের ৬৭ দশমিক ৩ শতাংশ ডে লেবার, ১৬ শতাংশ কৃষি কাজ, ৪ দশমিক ৭ শতাংশ মাছ ধরা, ৪ শতাংশ মুদি দোকানের কাজ এবং ১১ দশমিক ৪ শতাংশ অন্যান্য কাজ করে। এছাড়া হাওর এলাকায় প্রতিবন্ধী শিশুদের বেশিরভাগই স্কুলে ভর্তি হয় না।
গবেষণার সুপারিশে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুদের ঝরে পড়ার হার হ্রাস ও ভর্তির হার বাড়লেও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন করতে হলে এর গুণগত মান ও বাজেট বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। দুর্গম এলাকায় শিশুদের মিড ডে মিল, যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগ নিতে হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এমডিজির অনেক লক্ষ্যই আমরা অর্জন করতে পেরেছি।
সূত্র: লেখাপড়া২৪