বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজের প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক দ্বিগুণ উৎসব বোনাস পেয়েছেন। তবে এই দ্বিগুণ বোনাস শিক্ষকদের কাজে খুশি হয়ে নয়, ভুলক্রমে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটির এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ইএমআইএস) সেলের অদক্ষতায় এমন কাণ্ড ঘটেছে।
মাউশি সূত্রে জানা যায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস ছাড় করা হয়। শিক্ষকরা তাঁদের মূল বেতনের ২৫ শতাংশ বোনাস পান। আর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পান মূল বেতনের ৫০ শতাংশ। কিন্তু ভুলক্রমে ৩০ হাজার শিক্ষকের ২৫ শতাংশের স্থলে ৫০ শতাংশ হারে বোনাস পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দুই কোটি টাকা বেশি খরচ হলেও সেলের কর্মকর্তাদের মনে বিষয়টি কোনো সন্দেহের উদ্রেক করেনি।
জানা যায়, ২০০৪ সাল থেকে ব্যাংকে বেতন-বোনাসের স্টেটমেন্ট পাঠায় ইএমআইএস সেল। এর আগে কাজটা করত ব্যানবেইস। গত ১০ বছর ধরে তারা এ কাজ করলেও এখনো দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি। প্রতিবছরই উৎসব ভাতা দেওয়ার সময় কোনো না কোনো ঝামেলা হয়। গত রমজানের ঈদেও বেশ কিছু শিক্ষক যথাসময়ে তাঁদের বোনাস পাননি। শিক্ষকরা আবেদন করার পর ঈদের পর তাঁদের বোনাস দেওয়া হয়। এবার যথাসময়ে না পাঠানোর অভিযোগে নয়, দ্বিগুণ বোনাস ছাড় করে নিজেদের যোগ্যতা প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে ইএমআইএস সেল। তিন লাখ ৬৫ হাজার ৯৪৭ জন শিক্ষক ও এক লাখ চার হাজার ২২২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সব তথ্যও তাদের কাছে নেই।
মাউশির উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, ‘ব্যাংকে স্টেটমেন্ট পাঠানোর দায়িত্ব ইএমআইএস সেলের। তাই এই ভুলের দায়-দায়িত্ব তাদের। তবে আমরা শিক্ষকদের জানিয়েছি, তাঁরা যে হারে বেতন-বোনাস পান সেই হারেই যেন উত্তোলন করেন। ব্যাংকে থাকা অতিরিক্ত টাকা ষাণ্মাষিক হিসাবের সময় ফেরত নেওয়া হবে।’
সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট আবুল ফজল মো. বেলাল বলেন, ‘শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঠিক তথ্য আমাদের কাছে নেই। টিচিং প্রফেশনদের ২৫ শতাংশ ও নন-টিচিং প্রফেশনদের ৫০ শতাংশ বোনাস দেওয়া হয়। প্রতিবছরই কিছু ভুলভ্রান্তি থাকে।’