চতুর্থ বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্টুডেন্টস কেবিটেন নির্বাচন। মাধ্যমিক পর্যায়ে ২৭ ও মাদসারা পর্যায়ে ২৯ জানুয়ারি মোট ২২ হাজার ৬৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট ২০১৮’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, কিশোর বয়স থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণতন্ত্র চর্চা তৈরি করতে ‘স্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচনের’ আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে একে অপরকে সহযোগিতা করা, শ্রদ্ধা প্রদর্শন, শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি ও ঝড়ে পড়া রোধে সহাযোগিতা, পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিশ্চিতসহ ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে ছোট পরিসরে এ আয়োজন করা হলেও এবার সারাদেশে ৮টি মহানগরের ২২ হাজার ৬৪৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে ১৬ হাজার ৯৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৬ হাজার ৫৫৭টি দাখিল মাদরাসা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ বছর ১ লাখ ৮১ হাজার ১৫২টি পদের জন্য ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৯ শিক্ষার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। মোট ভোটার ১ কোটি ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৩৪৮ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ভোটারের সংখ্যা ৫৫ শতাংশ।
কেবল মাধ্যমিক পর্যায়ের (৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মাধ্যমিক পর্যায়ে ২৭ ও মাদরাসা পর্যায়ে ২৯ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এবং ফাজিল-কামিল মাদরাসা) এ নির্বাচনের আওতায় থাকবে না।
নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে ৮ সদস্যের স্টুডেন্টস কেবিনেট। তাদের মধ্যে থেকেই গঠন করা হবে মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী। ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির যেকোনো ছাত্রছাত্রী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ ৮টি ভোট দিতে পারবে।
তার মধ্যে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে এবং যেকোনো তিন শ্রেণিতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দিতে পারবে। প্রতি শ্রেণি থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। পাঁচ শ্রেণিতে পাঁচজন নির্বাচনের পর তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজন নির্বাচিত হবে।
বিজয়ীরা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সংরক্ষণে আটটি প্রধান দায়িত্ব (বিদ্যালয়, আঙ্গিনা ও টয়লেট পরিস্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষ রোপণ ও বাগান তৈরি ইত্যাদি দিবস ও অনুষ্ঠান উৎযাপন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ণ এবং আইসিটি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ) পালন করবে।
নির্বাচনী প্রচারের জন্য কোনো ধরনের ছাপানো পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার ও দেয়াল লিখন করা যাবে না। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করা যাবে। প্রতিষ্ঠানের সীমানা বা চত্বরের বাইরে প্রচার করা যাবে না। নির্বাচন পরিচালনার জন্য শিক্ষার্থীদের নিয়েই তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে।
প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সহকারী শিক্ষকরা দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অষ্টম নবম শ্রেণির একজন করে দু’জন শিক্ষার্থীদের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত হবেন।
নির্বাচন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রয়োজনে একজন সহকারী শিক্ষককে সমন্বয়কারী হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কক্ষ স্থাপন করে গোপনীয়তার সঙ্গে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। স্টুডেন্টস কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় একজন প্রধান প্রতিনিধি মনোনীত করবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা করবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দু‘জন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করতে হবে, যারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সহায়তা করবে। তবে তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।