১১টি উপায়ে আপনার চাকরির বেতন বাড়িয়ে নিতে পারেন

ইন্টারভিউ শেষ করার পর যে জিনিসটি আসে তার জন্যই সকল চাকরিপ্রার্থী অপেক্ষায় থাকে। ঠিকই ধরেছেন, আপনার পে প্যাকেজ কী হবে তা নিয়ে কথাবার্তা হয় সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই পর্বে এককথায় খানিকটা দড়ি টানাটানি হয়। এই টানাটানির জেরে অনেক সময়ই প্রার্থীরা বেতন খুইয়ে বসেন। তবে বুদ্ধি করে যদি কথা বলা যায় ‘কষ্টের কেষ্ট’ মেলে। এ ক্ষেত্রে কী ভাবে কথা বলা উচিত জানাচ্ছি আমরা।
Viva
১. নিজের মূল্য বুঝে বেতন হাঁকুন
প্রথমেই আপনাকে নিজের মূল্য জানতে হবে। আপনি কতটা বেতন পাওয়ার যোগ্য তা নিরপেক্ষভাবে আগে নিজে ভাবুন। তারপর প্যাকেজের কথা বলুন। কথা বলার সময় যদি নিজের ওপর আপনারই সন্দেহ থাকে, তবে আপনি নিঃসন্দেহে হারবেন। কনফিডেন্সের সঙ্গে কথা বলুন। নিজের মূল্য বুঝিয়ে দিন, প্যাকেজ পাবেন মনের মতো।

২. হঠকারিতা চলবে না
চাকরি পাওয়ার জন্য অনেকেই যা প্যাকেজ পাচ্ছেন তাতেই ‘হ্যাঁ’ বলে দেন। এখানেই দাঁও মারেন HR-রা। আগে শুনে নিন আপনাকে কী দেওয়ার কথা ভাবে হচ্ছে, তার পর আপনি কী চাইছেন সেটা বলুন। মনে রাখবেন প্রথমে যে প্যাকেজটা আপনাকে দেওয়া হবে সেটা কম হিসাবেই ধরা থাকে। তাই অপেক্ষা করুন। হঠকারি হবেন না।

৩. ৩০ বাড়াতে চাইলে ৪০ বলুন
মনে রাখবেন যিনি আপনার সঙ্গে স্যালারি নিয়ে কথা বলছেন তিনি আপনার থেকে অনেক বেশি বুদ্ধি রাখেন। আপনি যা চাইছেন তাঁরা সব সময় সেটি কমানোর চেষ্টা করবেন। তাই একটু বেশি বললে ক্ষতি নেই।

৪. অন্য সংস্থার অফার দেখান
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, ব্লাফ সব ক্ষেত্রে খাটে না। যদি সত্যিই আপনার কাছে অন্য সংস্থার ভালো বেতনের অফার থাকে সেটা বলুন। না হলে নয়। যদি সেই সংস্থা বর্তমান সংস্থার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়, তবে তো আরও ভালো। এটা খুব ভালো কাজ করে।

৫. ইনসেনটিভ এবং বোনাস ধরুন
আগের সংস্থায় বেতন যা পেতেন তার সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা এবং বোনাস অবশ্যই ধরবেন। তার পর প্যাকেজের কথা বলুন।

৬. অ্যাগ্রেসিভ নয়, যুক্তি দিয়ে কথা বলুন
‘ঠাণ্ডা মুণ্ডি কাজ করে বেশি’। বহু পুরনো কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিচ্ছি। তাই কোনো ক্ষেত্রেই মাথা গরম করা চলবে না। আপনি যে প্যাকেজটি চাইছেন তা যে আপনি পাওয়ার যোগ্য সেটা যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিন। এটা মোক্ষম কাজ করবে।

৭. অন্যেরা কত পাচ্ছেন, একটু খোঁজ করুন
যে সংস্থায় চাকরি নিতে যাচ্ছেন, সেখানে অন্যান্যরা কেমন বেতন পান, সেটা একটু খোঁজ খবর করুন। এমন লোকের সঙ্গে কথা বলুন, যিনি এ ব্যাপারে জানবেন। জেনে নিলে আপনিও দরটা বুঝতে পারবেন।

৮. রিইমবার্সমেন্ট নিয়ে কথা বলুন
এটা একটা অত্যন্ত জরুরি বিষয়। শুধু প্যাকেজ নিয়ে নয়, স্যালারি ব্রেক ডাউন করে বুঝে নিন মাস গেলে হাতে কত পাবেন। যদি সেখানে কোনো রিইমবার্সমেন্ট-এর ব্যাপার থাকে, তার নিয়মগুলি ভালো করে জেনে নিন, না হলে মাসের শেষে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।

৯. মন নয়, মস্তিষ্কের কথা শুনুন
মনে করুন আপনার স্বপ্নের সংস্থায় কম মাইনের চাকরি পাচ্ছেন, একই সঙ্গে একটি ভালো সংস্থায় বেশি মাইনের চাকরি পেলেন, কোনটা করবেন? যদি প্রথমটা বাছেন, তাহলে কিন্তু ভুল করবেন। জানবেন, আপনার প্যাকেজ দেখেই পরবর্তী সংস্থার প্যাকেজ ঠিক করা হবে। তাই এ ক্ষেত্রে মনের কথা না শুনে মস্তিষ্কের কথা শুনুন।

১০. না বলতে ভয় পাবেন না
যদি অপর পক্ষ প্যাকেজের ব্যাপারে কোনো কথা শুনতে রাজি না থাকেন, তবে না বলতে ভয় পাবেন না। যদি রাজি হয়ে যান তবে তারা চেপে বসতে পারে। না বলার অর্থ আপনি এর থেকে ভালো বেতনের কাজ পাবেন সেটা বুঝিয়ে দেওয়া। এটাও অনেক সময় কাজ করে। যেটা চাইছেন, সেটা পেয়ে যেতে পারেন।

১১. অফার লেটারের পর দরকষাকষি নয়
যা করবেন সেটা অফার লেটার হাতে পাওয়ার আগেই করতে হবে। একবার সেটা টাইপ হয়ে আপনার কাছে পৌঁছে যাওয়ার অর্থ HR আপনার কোনো কথা শুনবে না। যদি রাজি হন তা হলে কাজ করুন, না হলে নয়। এটা করার আরও একটা খারাপ প্রভাব রয়েছে। আগামী দিনে অ্যাপ্রাইজালের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে।