সারাদেশের একযোগে সরকারি হাইস্কুলে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১৭ ডিসেম্বর। শেষ হবে ২০ ডিসেম্বর। এর আগে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ইসি এ সময়সূচির ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে বলে জানা গেছে। এ পরীক্ষা সামনে রেখে রোববার ভর্তি নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, ভোটের আগের দিন বিকেল থেকে ভোট কেন্দ্রে অবস্থান করবেন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ৭ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং ১৮ থেকে ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ নেয়া হবে। প্রশিক্ষণের জন্যও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করা হবে।
মাউশি সূত্র জানায়, ইসির এ সিডিউল সামনে রেখে এখন ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সূচি নির্ধারিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, ‘চিঠির বাইরে ইসির সঙ্গে আমাদের মৌখিক আলাপ হয়েছে। ১৮-২৩ ডিসেম্বর প্রশিক্ষণের কথা থাকলেও মূলত শুক্র ও শনিবার প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তাই ১৭-২০ ডিসেম্বর পরীক্ষা নিতে ও লটারি করতে কোনো সমস্যা হবে না বলেই মনে হচ্ছে। ’
জানা গেছে, এবার ঢাকার ৪১ হাইস্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। হাইস্কুলগুলো তিন গ্রুপে ভাগ করে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা হবে। ৪১টি হাইস্কুলের মধ্যে ‘ক’ও ‘খ’ গ্রুপে ১৪টি করে এবং ‘গ’গ্রুপে ১৩টি হাইস্কুল আছে। এরমধ্যে ৩৮টি হাইস্কুলে ১২ হাজার ৩৬৬টি আসন আছে।
এরমধ্যে ১৭ হাইস্কুলে প্রথম শ্রেণি রয়েছে। প্রথম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী নেয়া স্কুলগুলোর মধ্যে আছে- আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধানমন্ডি গভ. ল্যাবরেটরি উচ্চবিদ্যালয়, ধানমন্ডি গভ. বয়েজ উচ্চ বিদ্যালয়, ধানমন্ডি গভ. বয়েজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ফিডার শাখা, তেজগাঁও বালক উচ্চবিদ্যালয়, তেজগাঁও বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মতিঝিল বালক উচ্চবিদ্যালয়, খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুল, খিলগাঁও সরকারি হাইস্কুলের ফিডার শাখা, নারিন্দা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ সংযুক্ত উচ্চবিদ্যালয়, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও গণভবন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।
ভর্তি নীতিমালা : সব মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। উপজেলা সদরেও কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। তবে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোনো কারণে অনলাইনে না করা গেলে কেবল উপজেলার ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি করা যাবে।
দ্বিতীয়-অষ্টম শ্রেণির শূন্য আসনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুসারে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের প্রস্তুত করা মেধাক্রম অনুসারে নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির পর অবশিষ্ট শূন্য আসনে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্ধারিত ভর্তি কমিটির বাছাই করতে হবে। ভর্তির ফরম বিদ্যালয়ের অফিসে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, ডিসি অফিস, বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-৫০, এরমধ্যে বাংলা-১৫, ইংরেজি-১৫, গণিত-২০ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা। চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-১০০। এরমধ্যে বাংলা-৩০, ইংরেজি-৩০, গণিত-৪০ নম্বর থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা।
ভর্তি নীতিমালায় বলা হয়েছে : সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ঢাকা মহানগরীর স্কুলে পার্শ্ববর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ এলাকা কোটা সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়ে ‘সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা-২০১৮’প্রণয়ন করে রোববার (২৫ নভেম্বর) নীতিমালাটি প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
নীতিমালায় ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে সব মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা সদরের সব সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপজেলা সদরেও কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। তবে নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোনো কারণে অনলাইনে না করা গেলে কেবল উপজেলার ক্ষেত্রে ম্যানুয়ালি করা যাবে।
প্রথম-নবম শ্রেণির ভর্তি : নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবশ্যিকভাবে লটারির মাধমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি শূন্য আসনের সমান সংখ্যক অপেক্ষমাণ তালিকাও প্রস্তুত রাখতে হবে। ভর্তি কমিটি নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ভর্তি করা হবে।
দ্বিতীয়-অষ্টম শ্রেণির শূন্য আসনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুসারে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের প্রস্তুত করা মেধাক্রম অনুসারে নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির পর অবশিষ্ট শূন্য আসনে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্ধারিত ভর্তি কমিটির বাছাই করতে হবে।
কোটা সংরক্ষণ : ঢাকা মহানগরীতে সরকারি বিদ্যালয় এলাকায় ওই এলাকার ৪০ শতাংশ কোটা রেখে অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট আসনের ১০ শতাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা সন্তানদের ছেলে-মেয়ের জন্য ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ২ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য আরও ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়গুলোর অবস্থান, শিক্ষার্থীদের সুবিধা/অসুবিধা বিবেচনা করে পরীক্ষা কমিটি বিদ্যালয়গুলোকে বিভিন্ন ক্লাস্টারে বিভক্ত করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা আবেদন ফরমে পছন্দক্রম উল্লেখ করে দেবে।
ভর্তি ফরম : ভর্তির ফরম বিদ্যালয়ের অফিসে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, ডিসি অফিস, বিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। এবার ভর্তির আবেদন ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত থেকে বেশি হবে না।
মাউশি পরিচালক ড. মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, আবেদন কার্যক্রম পরিচালিত হবে টেলিটকের মাধ্যমে। www.dshe.gov.bd এবং www.teletalk.com সাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ঢাকা মহানগর এবং ঢাকার বাইরের প্রায় সাড়ে ৩শ’স্কুলের ভর্তি কার্যক্রম আলাদাভাবে সম্পন্ন হবে। প্রথম শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষার্থীর বয়স জানুয়ারিতে ছয় বছরের বেশি হতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার সময় ও মান বণ্টন : দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-৫০, এরমধ্যে বাংলা-১৫, ইংরেজি-১৫, গণিত-২০ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা। চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-১০০। এরমধ্যে বাংলা-৩০, ইংরেজি-৩০, গণিত-৪০ নম্বর থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। নীতিমালায় ভর্তি পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটিও করে দেয়া হয়েছে।