প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের তথ্যমতে, সারাদেশে ৪,৫১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৩০ হাজার ১০৫টি। আর ২ শতাধিক সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পদও রয়েছে শূন্য।
শিক্ষক ও কর্মকর্তা স্বল্পতায় নাকাল অবস্থা প্রাথমিক শিক্ষার। যার কারণে শিশুদের মধ্যে বেড়ে যাচ্ছে স্কুলবিমুখ হওয়ার প্রবণতা। প্রতিষ্ঠার অনেক বছর পার হলেও এখনও কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়ে গেছে শিক্ষকস্বল্পতা। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, যথাসময়ে শিক্ষকদের পদোন্নতি ও নিয়োগ না হওয়া, বদলি বাণিজ্য, বাজেটের স্বল্পতা, যথাযথ কার্যকর উদ্যোগ না নেয়া, দুর্নীতি, সদিচ্ছার অভাবের কারণেই এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ভাষ্য অনুযায়ী, মানসম্মত শিক্ষা পেতে হলে প্রতি ২০ জন ছাত্রের জন্য একজন শিক্ষকের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদের তুলনায় শিক্ষকের আধিক্য, আবার কোথাও অপর্যাপ্ততা।
দেশের সরকারি কলেজগুলোতে মোট ১৫,২৮৯টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৩,৭৫৪টি পদই শূন্য। প্রায় ১৪টি পাবলিক ভার্সিটিতে এখনও রয়ে গেছে শিক্ষক সংকট। এতে করে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা যেমন শিক্ষার মানগত সুবিধা লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি তাদের পড়তে হচ্ছে সেশনজটেও।
দেশের শিক্ষার উন্নয়ন এবং অর্থনীতির উন্নয়ন একই সুতোয় গাঁথা। অর্থনৈতিকভাবে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে শিক্ষার ক্ষেত্রেও তার প্রতিফলন ঘটানো অপরিহার্য। সে জন্য যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষক সংকটের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
সমৃদ্ধ জাতি গঠনে সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ- এমন প্রত্যাশা আমাদের সবার।
লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বিটেক), কালিহাতী, টাঙ্গাইল।
সূত্র: জাগো নিউড ২৪ ডট কম