বেতন স্কেলের ‘বৈষম্য’ নিরসনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি চলতি মাসের মধ্যে মেনে নেওয়া না হলে একযোগে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার ‘হুমকি’ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।
রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব অধাপক এএসএম মাকসুদ কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ফরিদ বলেন, ‘এ মাসের মধ্যে শিক্ষকদের দাবি না মানলে ২ জানুয়ারি ফেডারেশনের সভা থেকে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সেটা কমপ্লিট শাটডাউনের মতো কঠোর কর্মসূচিও হতে পারে।’
ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘অষ্টম জাতীয় বেতনকাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবনমনের প্রতিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য আন্দোলনের মুখে গঠিত বেতন-বৈষম্য দূরীকরণ-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সঙ্গে গত ৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত আলোচনা হয়। এতে অষ্টম জাতীয় বেতনস্কেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখা, সপ্তম বেতনস্কেলে বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা না কমানো, অষ্টম বেতনস্কেলে সিনিয়র সচিবের জন্য নির্ধারীত স্থানে গ্রেড-১ প্রাপ্ত অধ্যাপকদের থেকে একটি অংশকে শতকরা হারে উন্নীত করা এবং অষ্টম বেতনস্কেলে শিক্ষকদের প্রারম্ভিক বেতন সপ্তম গ্রেডে সম্ভব না হলে অষ্টম গ্রেড থেকে শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে কেবল তৃতীয়টি বাস্তবায়নের পর্যায়ে আছে।’
গত ১৫ ডিসেম্বর অর্থ বিভাগ থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবের পাঠানো একটি পরিপত্রের কথা উল্লেখ করে মাকসুদ কামাল বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা পরিপত্রটি গত ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বেতন-বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভার গৃহীত সুপারিশ বলে চালিয়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত বেতন বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি নেয়নি। অর্থমন্ত্রী ছাড়া ওই সভায় উপস্থিত বেতন-বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অন্য কোনো সদস্য পরিপত্রে উল্লিখিত সিদ্ধান্ত অনুসমর্থন বা অনুস্বাক্ষরিত করেননি।’
পরিপত্রটিকে মন্ত্রিসভা কমিটির সিদ্ধান্তের পরিপন্থী ‘বিকৃত ও বিতর্কিত’ দলিল হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল এটি বাতিলের দাবি জানান। তিনি একটি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এধরনের পরিপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। চলতি ডিসেম্বরের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ‘অর্থমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি’ পূরণের জন্য আহ্বান জানান অধ্যাপক মাকসুদ কামাল।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক নাজমা শাহীন, অধ্যাপক এজেএম শফিউল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া, অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমদ, সহকারী অধ্যাপক নিলীমা আক্তার, অধ্যাপক লাফিফা জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: সমকাল