বেতন কাঠামো ও গ্রেড স্কেল নিয়ে আন্দোলনের মুখে গত ১১ জানুয়ারি হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা। কয়েকদিন নির্জীব ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণগুলো। আজ বুধবার সকাল থেকে আবারও চেনা রূপ ফিরেছে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের। ক্যাম্পাসগুলো মুখরিত হয়েছে শিক্ষার্থীদের পদচারণায়। ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতিতে টানা ৯ দিন বন্ধ থাকার পর আজ বুধবার থেকে দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ জানা গেছে, আজ সকাল থেকে প্রায় সব বিভাগেই ক্লাস শুরু হয়েছে। আগের রুটিন অনুযায়ী ক্লাস চলছে। কয়েকটি বিভাগের স্থগিত পরীক্ষা শুরুর প্রক্রিয়া চলছে বলে কর্মকর্তা এবং শিক্ষকরা জানিয়েছেন। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ক্লাস হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ আলম জানান, ৯ দিন পর আজ ক্যাম্পাসে আসলাম। অনেকদিন পর প্রিয় প্রাঙ্গণ আর প্রিয় মুখগুলো দেখে খুব ভালো লাগছে। ক্লাস বন্ধ থাকায় বেশ কয়েকদিন পড়ালেখাও তেমন হয়নি। আজ নতুন করে পড়ালেখা শুরু করবো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, ক্লাস বন্ধ থাকলেও আমি এতোদিন ক্যাম্পাসেই ছিলাম। তবে অনেকেই বাড়িতে চলে গিয়েছিল। আজ সকাল থেকে ক্যাম্পাস আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। গতকাল বিকেলে অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর আজ ভোরেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে হাজির হন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ছে। সবগুলো বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী হাজির হয়েছে। আজ সকাল থেকে নিয়মিত ক্লাস শুরু হয়েছে। যেসব পরীক্ষা স্থগিত হয়েছিল- খুব দ্রুত সেগুলোর রুটিন দেওয়া হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাওন জানান, পত্র-পত্রিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর ঘোষণা জানার পর শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছেন, ক্লাস শুরুর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ক্লাস শুরুর আজ বুধবার বিকেলে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা।
প্রসঙ্গত, নতুন বেতন কাঠামোতে গ্রেড সমস্যা নিরসনের দাবিতে গত ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন দেশের পাবলিক ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শিক্ষকেরা দেখা করলে প্রধানমন্ত্রী দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। গতকাল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্মবিরতি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
তারা বলেছেন, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি ফেডারেশনের পর্যালোচনা সভা ডাকা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ওই পর্যালোচনা সভায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।