শিক্ষার্থী ভিসায় আরও কড়াকড়ি আনতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এখন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের দেশ থেকে দেশটিতে আসা শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রহিত করা হবে। আবার কোর্স শেষ হওয়ামাত্রই তাঁদের দেশে ফিরতে হবে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তেরেসা মে গত রোববার সরকারের নতুন এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশনা প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত সরকারি এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত ইইউর বাইরের দেশগুলো থেকে ১ লাখ ২১ হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে আসেন। একই সময়ে মাত্র ৫১ হাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন। ফলে শুধু শিক্ষার্থী ভিসার কারণেই ওই সময়ে ৭০ হাজার অভিবাসী বেড়েছে। এমন তথ্যের পরই তেরেসা মে নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেন। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে যুক্তরাজ্যে কর্মসংস্থান খোঁজার সুযোগ বন্ধ করতেই এ উদ্যোগ।
প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল সরকার যুক্তরাজ্যে মোট অভিবাসী বৃদ্ধির সংখ্যা বছরে এক লাখের নিচে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইইউর বাইরের দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের যুক্তরাজ্যে স্থায়ী হওয়া ঠেকাতে তারা গত মেয়াদেই কিছু কঠিন শর্ত চালু করে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, বৈধভাবে একনাগাড়ে কেউ ১০ বছর যুক্তরাজ্যে বাস করলেই স্থায়ীবাসের সুযোগ পান। এ পথ বন্ধ করতে ক্যামেরনের সরকার গত মেয়াদে শিক্ষার্থী ভিসায় সর্বোচ্চ আট বছর এবং কর্ম ভিসায় (ওয়ার্ক পারমিট) সর্বোচ্চ ছয় বছর অবস্থান নির্ধারণ করে দেয়। তারপরও শিক্ষার্থী এবং কর্ম ভিসা মিলে ১০ বছর পূর্ণ করে স্থায়ীবাসের সুযোগ এত দিন ছিল। সরকারের নতুন পরিকল্পনায় তা বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, কোর্স শেষ করামাত্রই শিক্ষার্থীকে স্বদেশে ফেরত যেতে হবে। সেখান থেকেই কর্ম ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আবার বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বিদেশিরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ পান। নতুন নিয়মে তা আর থাকবে না।
যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেট এবং ছোটখাটো প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন কাজের ওপর বেশ নির্ভরশীল। শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ রহিত করলে সমস্যায় পড়বে এসব প্রতিষ্ঠান। আবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আশঙ্কা, নতুন কড়াকড়ির কারণে যুক্তরাজ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীর আগমন কমে যাবে।