বাংলাদেশের যেসব শিক্ষার্থী স্বল্প খরচে বিশ্বস্বীকৃত শিক্ষা লাভ করতে চান, তাঁরা নিশ্চিন্তে রাশিয়াকে বেছে নিতে পারেন। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন) মধ্যকার মৈত্রী ও সহযোগিতা চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার্থে রাশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা অনার্স, মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অংশ নিতে রাশিয়ায় যেতে পারেন। রাশিয়ার পড়াশোনার মান বিশ্বস্বীকৃত। দুটি কারণে আপনি রাশিয়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। ওখানে শিক্ষার ব্যয় কম এবং পড়তে যাওয়ার জন্য টোয়েফল বা আইইএলটিএস লাগে না।রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য শাখার সব বিষয়ে পড়া সম্ভব। রাশিয়ায় ব্যাচেলর ডিগ্রির মেয়াদ চার বছর, মাস্টার্স ডিগ্রির মেয়াদ দুই বছর, স্পেশালাইজড ডিপ্লোমার মেয়াদ পাঁচ-ছয় বছর। তবে শুরুতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রথম এক বছর রুশ ভাষা শিখতে হবে। কিছু কিছু বিষয়ে ইংরেজি ভাষায় পড়ারও সুযোগ রয়েছে।
ভর্তির সময় ও শিক্ষাবর্ষ:
রাশিয়ার শিক্ষাবর্ষ দুই সেমিস্টারে বিভক্ত—প্রথমটি সেপ্টেম্বরে এবং দ্বিতীয়টি ফেব্রুয়ারিতে। সেমিস্টার বিরতিতে রয়েছে ছুটি। জানুয়ারিতে দুই সপ্তাহ ও জুলাই-আগস্টে ছয় সপ্তাহ। এ সময় শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগও রয়েছে।
খরচাপাতি:
রাশিয়ায় পড়াশোনার খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। বিজ্ঞান বিভাগের (স্নাতক) জন্য টিউশন ফি আড়াই হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার ডলার, কলা বিভাগের (স্নাতক) জন্য দুই হাজার ৮০০ থেকে আট হাজার ডলার এবং বাণিজ্য বিভাগের (স্নাতক) জন্য চার হাজার থেকে ছয় হাজার ২০০ ডলার। রাজধানী মস্কোর বাইরে টিউশন ফি আরও কম। নিজ খরচে রাশিয়ার খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য গড় নম্বর থাকতে হবে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে হোস্টেল-সুবিধা, যার জন্য ব্যয় হবে বছরে ৪৫০ থেকে আড়াই হাজার ডলার।
ভিসা ও ভর্তিরতথ্য:
ঢাকার রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্রের মাধ্যমে রাশিয়ার যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে। ভর্তির বিষয়ে ফ্রি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় জানুয়ারি থেকে জুলাই প্রতি মাসের শেষ কর্মদিবসে বিকেল চারটায় ঢাকার রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্রে।
বৃত্তি:
রুশ সরকার প্রতিবছর বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে থাকে, যা বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব ঠিকানা ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে মার্চ মাসে জানানো হয়। ৮০ শতাংশ নম্বর পেলে বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে। রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্রে রুশ ভাষা কোর্সে ভর্তি হয়েও রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্রের মাধ্যমে বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে। রুশ ভাষা কোর্সে ভর্তি নেওয়া হয় জানুয়ারি, এপ্রিল, জুলাই ও অক্টোবর মাসে।
যোগাযোগ:
শিক্ষা বিভাগ, রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিকেন্দ্র, ৪২ ভাষাসৈনিক এম এ মতিন সড়ক (সড়ক: ৭) ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা। ফোন: ০২-৯১১৮৫৩১, ০১৮১৭২৯৪৫৯৫।