ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ বিভাগের ৪টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৯ জনকে। এদের মধ্যে মাস্টার্স পাস না করেই ৩ জন নিয়োগ পেয়েছেন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। যদিও চারটি শূন্যপদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়ার বিষয়টি জানে না সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে ছুটিজনিত শূন্যপদের বিপরীতে ৪টি অস্থায়ী প্রভাষক পদে আবেদন আহ্বান করা হয়। এতে বলা হয়, প্রভাষক পদে আবেদনকারীকে অবশ্যই ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল অথবা কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে হবে।
এ ছাড়া উভয়টিতে প্রথম শ্রেণী অথবা জিপিএ/সিজিপিএ স্কেল ৪-এর মধ্যে ৩ দশমিক ৫০ অথবা কোনো বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমমানের ডিগ্রিপ্রাপ্ত হতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মাস্টার্স শেষ করার পূর্বে কারও শিক্ষক হওয়ার সুযোগ নেই। অথচ মাস্টার্স শেষ না হওয়া সত্ত্বেও তিনজনকে শর্ত শিথিল করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা বিরল। মাস্টার্স শেষ না করেও নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা হলেন : তানভীর আহমেদ, মো. নূরুস সাকিব ও সজীব বড়ুয়া। এ নিয়োগের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও শৃংখলা নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ছুটিজনিত শূন্যপদে ৪ জনকে নিয়োগ দেয়ার কথা থাকলেও সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ৯ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। যদিও শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ কিছুই জানে না। এ বিষয়ে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম নুরুল আমিন বলেন, ‘বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষক নিয়োগের কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। আমরা পত্রিকার পাতা দেখে বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি জানতে পেরেছি।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অনেক সময় কিছু বিভাগ মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়োগ না দেয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময়ই মেধার ভিত্তিতেই শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যে ৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তারা সবাই স্নাতক। তারা মাস্টার্স করছেন। মাস্টার্স পাস করার পর তাদের চাকরি স্থায়ী করা হবে। তিনি আরও বলেন, নিয়োগ কমিটি সুপারিশ করলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট অনুমোদন করলে শূন্যপদের বিপরীতে নিয়োগ দেয়া যায়।
নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত নয় শিক্ষক হলেন : ড. মো. শাহরুজ্জামান, মো. সিরাজুর রহমান, শান্তা বিশ্বাস, মো. মিনহাজুল ইসলাম, মো. সাজেদুল ইসলাম, সৈকত চন্দ্র দে, তানভীর আহমেদ, মো. নূরুস সাকিব ও সজীব বড়ুয়।
সূত্র: দৈনিক শিক্ষা