ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স (ICCR) ভারত সরকারের একটি স্বায়ত্বশাসিত সংগঠন। এটি ভারতের বৈদেশিক সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নিয়ে কাজ করে থাকে। স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ১৯৫০ সালের ৯ এপ্রিলে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ICCR এর অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে এর বিভিন্ন স্কলাশিপ প্রোগ্রাম। প্রতিবছর ২১টি স্কলারশিপ স্কীমের আওতায় বিশ্বের প্রায় ৭০টি দেশের ছাত্রদের ২০০০ স্কলারশিপ প্রদান করা হয়। যার অধিকাংশই এশিয়া, আফ্রিকা, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশ। ICCR তার নিজস্ব স্কলারশিপ স্কীম পরিচালনা ছাড়াও ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অন্যান্য স্কীমের জন্য একটি সংস্থা হিসেবেও কাজ করে। দেশ ভিত্তিতে বৃত্তির পরিমাণ যদিও উল্লেখ করা থাকে না। তবে, সাধারণত এ বৃত্তিতে ৫০-৬০ জন বাংলাদেশী ছাত্র প্রতিবছর সুযোগ পেয়ে থাকে। অবশ্য এর বিপরীতে বহুগুণ আবেদন করে।
এ বৃত্তি গ্রহণকারীদের থাকা-খাওয়া সব খরচ বহন করে ICCR কর্তৃপক্ষ। আন্তর্জাতিক সব ছাত্রের জন্য হলে থাকার ব্যবস্থা আছে। শিক্ষার্থীকে শুধু যাতায়াত খরচ বহন করতে হয়। টিকিট জমা দিলে সে খরচও দেয় ICCR কর্তৃপক্ষ। তাই আন্তর্জাতিক মানের সার্টিফিকেট অর্জনে প্রত্যাশী ছাত্ররা এ বৃত্তি গ্রহণ করতে পারেন।
এ বৃত্তি সাধারণত দুটি শ্লটে বা সময়ে দেয়া হয়ে থাকে। ভারতের ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের ক্লাস শুরুর সময়ের ওপর নির্ভর করে দুটি শ্লটের বিষয় আসে, তবে বৃত্তির ক্ষেত্রে কোনো মৌলিক পার্থক্য নেই।
বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য ICCR এর স্কলারশীপ স্কীমগুলো হলো:
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স (ICCR) স্কলারশীপ স্কীম
বিভিন্ন ভারতীয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশীদের জন্য সুযোগ আছে আন্ডার গ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট, এমফিল, পিএইচডি ও পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ লেভেলে।
বাংলাদেশ স্কলারশিপ স্কীম
ICCR এ স্কীমের আওতায় বাংলাদেশী ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান করে আন্ডার গ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট, এমফিল, পিএইচডি ও পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ লেভেলে। এ স্কীম শুধু বাংলাদেশী ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত এবং এর আওতায় সুযোগ পাওয়া অন্যান্য স্কীমের চেয়ে সহজ।
সার্ক চেয়ার/ফেলোশিপ/স্কলারশিপ স্কীম
ICCR সার্ক স্কলারশিপ স্কীম এর অধীনে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা ইনস্টিটিউটগুলোতে আন্ডার গ্রাজুয়েট ও পোস্ট গ্রাজুয়েট লেভেলে বাংলাদেশ থেকে বৃত্তি প্রদান করে।
AYUSH স্কলারশিপ স্কীম
বাংলাদেশসহ বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর জন্য ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে মোট ১৫ টি বৃত্তি প্রদান করা হয় AYUSH বিভাগের পক্ষ থেকে। যার অন্তর্ভুক্ত হলো আয়ুর্বেদিক, ইউনানী ও হোমিওপ্যাথির মতো বিষয়।
এছাড়া জেনারেল কালচারাল স্কলারশীপ স্কীম, কালচারাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, কমনওয়েলথ স্কলারশীপ/ফেলোশিপ প্লান প্রভৃতির আওতায়ও বাংলাদেশী ছাত্ররা আবেদন করতে পারেন।
আবেদনের জন্য যোগাযোগ
আবেদন করতে IELTS এর বাধ্যবাধকতা নেই। তবে অবশ্যই ইংরেজিতে দক্ষতা থাকতে হবে এবং সাধারনত ১ ঘন্টার একটি ইংলিশ টেস্ট নেয়া হয়। স্নাতকে আবেদনের জন্য এইচএসসিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ফলাফল বিবেচনা করা হয়। অনুরূপভাবে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি কোর্সের ক্ষেত্রেও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী থাকা প্রয়োজন। বৃত্তির জন্য আবেদন করার পর লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ পাওয়া যায়, এরপর মৌখিক পরীক্ষায় পাশ করলেই ভিসার পথ পরিস্কার হবে।
আবেদনের সুযোগ দেয়া হয় বিভিন্ন স্কীমে বিভিন্ন সময়ে। যেমন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ স্কলারশিপ স্কীমে সময়সীমা ছিল ৮ থেকে ১৯ জানুয়ারি ২০১২ পর্যন্ত, সার্ক স্কলারশিপ স্কীমে ১২ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আগ্রহীরা পরবর্তী ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আবেদনের সুযোগ নিতে পারেন।
এ বৃত্তির আবেদনপত্র ও অন্যান্য তথ্যের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনের এডুকেশন উইং-এ যোগাযোগ করতে হবে। হাউজ: ২, রোড নং: ১৪২, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
এছাড়া অ্যাসিসটেন্ট হাইকমিশন অফিস থেকেও ফর্ম সংগ্রহ করা যায়। ঠিকানা: হাউজ: ২১১, কুলসি,চট্টগ্রাম এবং হাউজ: ২৮৪/২, হাউজিং স্টেট, সপুরা উপশহর রাজশাহী।