ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও দেশের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জনক বলে পরিচিত এপিজে আবদুল কালাম ৮৩ বছর বয়সে সোমবার শিলংয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন।
মেঘালয়ের শিলং শহরের পুলিশ সুপার বিবেক সিয়াম স্থানীয় সময় রাত নটা নাগাদ বিবিসির কাছে মি. কালামের মৃত্যুসংবাদ নিশ্চিত করেন।
মি. কালাম মেঘালয়ে গিয়েছিলেন শিলংয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমন্টে একটি ভাষণ দিতে।
সেখানে সোমবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানমঞ্চেই তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে যান।
তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আইসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়, কিন্তু চিকিৎসকরা অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচাতে পারেননি।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
২০০২ থেকে ২০০৭ সাল, এই পাঁচ বছর ভারতের রাষ্ট্রপতির পদে ছিলেন আবুল পকির জয়নুল আবেদিন আব্দুল কালাম – যিনি ভারতের তৃতীয় মুসলিম রাষ্ট্রপতি।
হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী আটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন মি. কালাম।
অনেকেই মনে করেন ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার গ্লানি ঘোচানোর চেষ্টাতেই মি. কালামকে বিজেপি রাষ্ট্রপতি পদের জন্য সমর্থন করেছিল।
তবে তারও আগে ভারতে প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র প্রধান হিসেবে দেশের স্বল্প, মাঝারি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন মি. কালাম। তাকে ডাকা হত ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’ নামেও।
১৯৩১ সালের ১৫ই অক্টোবর দক্ষিণ ভারতের রাজ্য তামিলনাড়ুর অত্যন্ত দরিদ্র এক মৎস্যজীবী পরিবারে তাঁর জন্ম।
কিন্তু যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাধা অতিক্রম করে আব্দুল কালাম ভারতে বিজ্ঞানচর্চার শীর্ষে ও সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে আরোহণ করেছিলেন তা রূপকথাকেও হার মানায়।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অবিবাহিত, আর খুব সহজ সরল অনাড়ম্বর জীবনযাপনের জন্যও আজীবন পরিচিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসরের পর থেকেও মি. কালাম সারা দেশ জুড়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা-বিষয়ক ও প্রেরণামূলক বক্তৃতা দিয়ে বেড়াতেন, বহু জনপ্রিয় বইও লিখেছিলেন তিনি।