ভবনের অভাবে খোলা আকাশের নিচে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান দেয়া হচ্ছে। আশেপাশের অন্যান্য স্কুলগুলোর তুলনায় এই স্কুলে পড়াশুনার মান ভাল হওয়ায় অভিভাবকরা ঝুঁকছে স্কুলের প্রতি। কিন্তু স্কুলের ভবন আসবাবপত্র না থাকায় ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছে স্কুলটি। খোলা আকাশের নিচে বসে ক্লাস করতে হয় বলে আকাশে মেঘ জমলেই ছুটি দিতে বাধ্য হয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের কাছে আবেদন করা হলেও ইতিবাচক কোন সাড়া আসছে না।
জানা যায়, খোষঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় উপজেলার প্রাচীন বিদ্যালয়গুলোর একটি। এটি ১৯৪১সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৫-৯১৯৬ সালে অর্থবছরে এলজিআরডি’র ফ্যাসিলিটি বিভাগের মাধ্যমে একটি ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ভবন নির্মাণের কয়েক বছর পর ফাটল ধরে ছাদ ও দেয়ালের একাধিক স্থানে। ভবনটির ছাদের প্লাস্টার ও পিলারে ঢালাই খসে খসে খুলে পড়েছে। দরজা-জানালা ভাঙ্গা। ফলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটি পাঠদানের উপযুক্ত নয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করে। কিন্তু মেরামতের কোন আশ্বাস না পেয়ে দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাঠদান কার্যক্রম খোলা আকাশের নিচে চালিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবু জাহের ভূঁইয়া জানান, বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশী হওয়ায় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকির মধ্যেই পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। দিনদিন যে ভাবে ছাদসহ বিভিন্ন অংশ ধসে পরছে, তাতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এনিয়ে অভিভাবকদেরও ভয়ের শেষ নেই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনতী রানী শর্ম্মা বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়টি পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য এবং নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এরপরও কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ও খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ,এন,এম মাহবুব আলম জানান, নতুন ভবনের ব্যাপারে জেলা শিক্ষা অফিসারকে বেশ কয়েকবার লিখিত জানানো হয়েছে। এবং স্থানীয় এমপি মহোদয়কেও আমরা অবহিত করেছি।