বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের নতুন নীতিমালা জারি!

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের নতুন নীতিমালা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ ৩০ ডিসেম্বর শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে শুধু নতুন শিক্ষক নিয়োগে এই পদ্ধতি প্রযোজ্য হবে।

teacher

এ পরিপত্রের মাধ্যমে এখন থেকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ দেবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তারা প্রতিবছর পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য তালিকা করে দেবে। আজ বুধবার জারিকৃত পরিপত্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত বছরের ঠিক একই দিনে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সালে  শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ) বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন ।সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায়ও এ-সংক্রান্ত প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালার সংশোধনী চূড়ান্ত করার পর তা ভেটিং করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এই নতুন নীতিমালা ঘোষণা এবং কার্যকর হচ্ছে এই অক্টোবর মাসেই। এই সংশোধনীর ফলে শিক্ষক নিয়োগে নিবন্ধন সনদই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। নিবন্ধনের মেধাতালিকা ধরেই নিয়োগ দেওয়া হবে শিক্ষক নিয়োগ। এখন থেকে নিবন্ধন সনদের মেয়াদ থাকবে মাত্র তিন বছর। নতুন নীতিমালার ফলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেমন পরিবর্তন আসছে, তেমনি আসছে নিবন্ধন পরীক্ষায়ও।

শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেন স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও ম্যানিজিং কমিটি-গভর্নিং বডির অনুমোদনক্রমে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠাবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ৩০ নভেম্বরের মধ্যে জেলার চাহিদা এনটিআরসিএতে পাঠাবে। এনটিআরসিএ প্রতিবছর প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত সকল পরীক্ষা গ্রহণ করে চাহিদা অনুযায়ী পদ/বিষয় ভিত্তিক জাতীয় বিভাগ-জেলা-উপজেলা-থানাওয়ারী মেধাক্রম তৈরি করে ফলাফল ঘোষণা করবে।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান ম্যানেজিং কমিটি-গভর্নিং বডির অনুমোদনক্রমে প্রথম পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগের ন্যূনতম দুই মাস আগে প্রতিষ্ঠানে জনবল কাঠামোতে সরকার নির্ধারিত কোটার প্রাপ্যতা উল্লেখপূর্বক এনটিআরসিএতে অধিযাচনপত্র পাঠাবে। এনটিআরসিএ ওই অধিযাচনের ভিত্তিতে তাদের ওয়েবসাইটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করবে এবং নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অনলাইনে আবেদন করবেন।

পরিপত্রে আরো বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ অনলাইনে আবেদন প্রাপ্তির পর চাহিদা ও মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থীদের অবহিত রেখে নিয়োগযোগ্য প্রতিটি পদের বিপরীতে একজন করে প্রার্থীর নাম অধিযাচন প্রতিষ্ঠানে পাঠাবে। সে অনুসারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি এক মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দেবে। এনটিআরসিএ কর্তৃক কোনো প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচনের সময় সংশ্লিষ্ট মেধা তালিকা বিবেচনা করবে। তবে বিভাগীয় সদর এলাকায় অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে শুধু সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রার্থী অগ্রাধিকার পাবেন। অগ্রাধিকার প্রার্থী পাওয়া না গেলে জাতীয় মেধা তালিকা অনুসারে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করা হবে।

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রাধিকার বিবেচনা করা হবে না। এক্ষেত্রে জাতীয় মেধা তালিকা অনুসরণ করতে হবে। কর্মরত শিক্ষক যদি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন তবে তাকেও অন্যদের মতো আবেদনকারীদের একইরূপে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য বিবেচিত করা হবে।

ইতিপূর্বে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাসকৃতদের সনদে উল্লেখিত ঐচ্ছিক বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য মেধাক্রম নির্ধারিত হবে।