৩৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষার নানা কলাকৌশল নিয়ে বিষয়ভিত্তিক পরামর্শ দিচ্ছেন বিগত পরীক্ষার শীর্ষ মেধাবীরা। এ পর্বে ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে লিখেছেন ৩৫তম বিসিএসে প্রথম (পররাষ্ট্র ক্যাডার) মো. ওয়ারিসুল ইসলাম
বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ইংরেজি। এ বিষয়ে ভালো করার মানে প্রতিযোগিতার দৌড়ে অন্য সবার থেকে এগিয়ে যাওয়া।
আর খারাপ করলে গড় নম্বর অনেক কমে যাবে।
কী আছে ইংরেজিতে?
পার্ট ‘এ’ এবং পার্ট ‘বি’ মিলিয়ে মোট ২০০ নম্বর বরাদ্দ আছে। রিডিং কম্প্রিহেনশন থেকে ১০০ নম্বর, যা সাধারণ প্রশ্ন ৩০, ব্যাকরণ ৩০, সম্পাদকের কাছে চিঠি ২০ এবং সারাংশ ২০ নম্বর যোগ করলে পাওয়া যায়। আর পার্ট বি-তে বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ ২৫, ইংরেজি থেকে বাংলা ২৫ এবং রচনায় ৫০সহ মোট ১০০ নম্বর। সর্বমোট ২০০ নম্বর।
কী কী জানতেই হবে
ইংরেজি শুদ্ধভাবে লিখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবার আগে Right form of verbs-এর ওপর পূর্ণ জ্ঞান থাকা চাই। অ্যাকটিভ-প্যাসিভ ফর্ম ও টেন্সের সঠিক ব্যবহার, বিভিন্ন ধরনের সেনটেন্সের স্ট্রাকচার সম্পর্কে জানলে ইংরেজি ভালো করা সহজ হয়। Simple, Complex ও Compound Sentence-এর স্ট্রাকচার, ট্রান্সফরমেশন সম্পর্কে পড়তে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় Word-এর Different formation. একটি ডড়ত্ফ-কে কিভাবে Noun/Verb/Adjective-এ রূপান্তর করা যায়, তা দেখে নিতে হবে। এ ছাড়া গ্রামারের ব্যবহারের ওপর ধারণা থাকতে হবে।
কিভাবে পড়বেন?
মনে রাখবেন, ইংরেজির ব্যবহার করতে হবে শুদ্ধভাবে, গ্রহণযোগ্যভাবে। প্রথমে নিজের মনে বিশ্বাস রাখুন, ইংরেজি ভাষা অনেক সহজ। আপনি Grammar পড়ছেন না, একটি ভাষা শিখছেন। ইংরেজির ওপর নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেকোনো ভালো Grammar বই থেকে Basic Grammar-এর টংধমব দেখে নিন। প্রয়োজনে যাঁরা ইংরেজিতে দক্ষ, তাদের কাছ থেকে সহায়তা নিন। যেকোনো ইংরেজি লেখা বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করুন। ইংরেজি পত্রিকা পড়ুন। Sentence Structure, Word usage, Linker usage ও অনুবাদের প্রস্তুতির জন্য একই ঘটনার ওপর বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকার রিপোর্টে চোখ বোলান। অনেক বহুল ব্যবহৃত শব্দের অর্থ, সমার্থক শব্দ অবচেতন মনেই আপনি জেনে ফেলবেন। অনেক প্রশ্নই সমসাময়িক বিষয়ের ওপর হয়। তাই ইংরেজি পত্রিকা পড়ার অভ্যাস বিস্ময়কর ফল নিয়ে আসতে পারে।
বাজার থেকে ভালোমানের যেকোনো একটি ইংরেজি লিখিত পরীক্ষার গাইড সংগ্রহ করে নিন। বিগত বছরের প্রশ্নও দেওয়া থাকে এতে। অনুশীলনের ক্ষেত্রে এটি কাজে লাগবে।
ভালো করার উপায়
দশম থেকে ছত্রিশতম বিসিএসের ব্যাকরণ অংশটি ভালো করে পড়ে নিন। কম্প্রিহেনশন যত পারেন পড়ুন। ইংরেজি পত্রিকার সমসাময়িক তাত্পর্যপূর্ণ কলাম বা লেখা পড়তে পারেন। ৩৫তম বিসিএস পত্রিকায় একটি খবর থেকেই প্যাসেজ এসেছিল। ব্যাকরণ অংশে প্রিলিতে যা পড়েছেন তা-ই সই! সেসব পড়াই বারবার রিভিশন দিন। প্যাসেজ থেকেই সামারি করতে হয়। এ ক্ষেত্রে নিজের মতো করে লিখতে হবে। সম্পাদকের কাছে চিঠি পড়ার তেমন কিছু নেই। শুধু নিয়মকানুন জেনে রাখুন। তাতেই হবে। আর দুই পৃষ্ঠার বেশি লিখবেন না। যত পারা যায় শব্দের অর্থ শিখুন। প্রচুর অনুশীলন করুন। ফ্রি হ্যান্ডরাইটিংয়ের জন্য অনুশীলন অনেক কাজে দেয়। প্রতিদিন একটা টপিক ধরে এক পৃষ্ঠা করে লেখার চর্চা করুন। টেন্স ও প্রিপজিশন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণার জন্য চৌধুরী অ্যান্ড হোসাইনের এসএসসি ইংলিশ সেকেন্ড পেপার বইটি পড়তে পারেন। ভাবানুবাদ করতে হবে, আক্ষরিক অনুবাদ করতে যাবেন না। থিমটা বোঝাতে পারলেই নম্বর আসবে। রচনা কী আসবে বলা কঠিন। তবে দশ-বারোটি কমন টপিকস সম্পর্কে ধারণা নিয়ে গেলে লিখে আসতে পারবেন।
কী লিখব? কিভাবে লিখব?
পরীক্ষার দিন লেখা শুরুর আগের কাজ হলো মাথা ঠাণ্ডা রাখা। কোনো প্রশ্ন, শব্দ ও বাক্য বুঝতে না পারার মানে পুরো পরীক্ষা খারাপ হওয়া নয়। তাই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে পরীক্ষা দিন। চেষ্টা করুন নির্ভুল ইংরেজি লিখতে। ভুল ও জটিল বাক্য লেখার থেকে ছোট ছোট সরল বাক্য লেখা শ্রেয়। রচনা ও চিঠিতে চেষ্টা করুন তথ্য ও উপাত্ত তুলে ধরতে। অনুবাদ যত বড় হোক, হুবহু অর্থ না লিখে ভাবানুবাদ করুন। শুদ্ধ ও সুন্দরভাবে মূল ভাব তুলে ধরুন। কী লিখবেন সেটা বড় কথা না, কিভাবে লিখবেন সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। খাতার উপস্থাপনার ওপর জোর দিন। একটু চেষ্টা করলেই ইংরেজিতে ভালো করা সম্ভব।
সূত্র: কালের কণ্ঠ