৩৪তম ও ৩৫তম বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের শূন্য পদ পূরণের জন্য কোটা শিথিলের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করা হবে।
এ ছাড়া জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৬ এবং হজ প্যাকেজ-২০১৬ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এবার সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে হজ করতে সৌদি আরব যেতে পারবে এক লাখ ১৩ হাজার ৮৬৮ জন। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে পাঁচ হাজার এবং বেসরকারিভাবে এক লাখ আট হাজার ৮৬৮ জন। গত বছর এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জনের হজে যাওয়ার অনুমতি ছিল।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, নিয়োগ হয়ে যাওয়া ৩৪তম বিসিএসে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে কোটার বিপরীতে ৬৭২টি শূন্য পদ রয়েছে। এই পদগুলো ৩৫তম বিসিএসের মেধাতালিকা থেকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পূরণ করা হবে।
অন্যদিকে লিখিত পরীক্ষা হয়ে যাওয়া ৩৫তম বিসিএসে মোট এক হাজার ৮০৩টি পদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এসব পদের মধ্যে কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের পদ এক হাজার ৩৪৮টি। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পদ রয়েছে ৬০৬টি। এই বিসিএসেও কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে কোটার বিপরীতে যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে সেগুলোও একই বিসিএসের মেধাতালিকা থেকে পূরণ করা হবে।
বর্তমানে প্রথম শ্রেণির চাকরিতে বেশির ভাগ পদই কোটার ভিত্তিতে পূরণ করা হয়। প্রথম শ্রেণির চাকরির মাত্র ৪৫ শতাংশ পূরণ হয় মেধার ভিত্তিতে। বাকি ৫৫ শতাংশই পূরণ করা হয় কোটার ভিত্তিতে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, মহিলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ এবং জেলা কোটা বা সাধারণ কোটা ১০ শতাংশ।
বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটার পদ পূরণে সংরক্ষণজনিত কোনো বিধিনিষেধ নেই। শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটার পদ শূন্য রাখতে হয়। এই সংরক্ষণজনিত কারণে প্রতিটি বিসিএস পরীক্ষায় শূন্য পদ পূরণ করা যায় না। ২০১০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য শূন্য পদ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয়।
মন্ত্রিসভা বৈঠকে দুই বিসিএসের জন্য কোটা শিথিলের বিষয়টি আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার নাতিদের কোটা সুবিধা দেওয়ার পরও মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ হচ্ছে না! ঠিক আছে, দুটি বিসিএসের জন্য কোটা শিথিল করা হলো। পরের বিসিএসের সময় কোটা অনুসরণ করতে হবে। কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া গেলে তাদেরই নিয়োগ দিতে হবে।
হজ প্যাকেজ ও নীতি অনুমোদন : মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, হজের জন্য সরকার এবার দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। প্যাকেজ-১-এর খরচ ধরা হয়েছে কোরবানিসহ তিন লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা। গত বছর তা ছিল তিন লাখ ৫৪ হাজার ৭৫৪ টাকা। প্যাকেজ-২-এর খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে কোরবানিসহ তিন লাখ চার হাজার ৯০৩ টাকা, যা গতবার ছিল দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০৬ টাকা।
মৌলিক ও অভিন্ন খরচ এবার এক লাখ ৫৫ হাজার ৪৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার এই খরচ বেড়েছে সাত হাজার টাকা।
এবারের হজে ব্যয় বাড়ার কারণ জানতে চাইলে সচিব বলেন, ডলারের মূল্যসহ অন্য খরচ বেড়ে যাওয়ায় হজের খরচ বেড়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছর প্রত্যেক হজযাত্রীকে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে এবং তাদের সৌদি সরকারের হজ শনাক্তকরণ (আইডেন্টিফিকেশন) কার্ড দেওয়া হবে।
শফিউল আলম বলেন, গত বছর কিছু বেসরকারি এজেন্সির অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের দুর্ভোগ এবং বিশেষ করে তাদের জিনিসপত্র আনা-নেওয়ার সমস্যার কথা মন্ত্রিসভায় আলোচিত হয়। বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদারকির আশ্বাস দিয়েছেন।
সূত্র: কালেরকন্ঠ