সারাদেশে সরকারি প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষক সংকট নিরসনে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্র জানায়, পুল ও প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের মামলা জটিলতায় গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত ছিল। এ ক্যাটাগরির শিক্ষকদের নিয়োগ জটিলতা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে আদালত থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়। ফলে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও সে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরে।
জানা গেছে, বর্তমানে পুল-প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হওয়ায় নতুনভাবে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে চলতি সপ্তাহের শুরুতে ডিপিইতে সভা হয়েছে। সে সভায় ২০১৪ সালের নিয়োগ কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এছাড়াও এ নিয়োগ কার্যক্রম শেষে সহকারী শিক্ষক পদে শূন্য আসনে নতুন করে নিয়োগ দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে ডিপিইর নিয়োগ কমিটিকে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। কমিটির সদস্যরা এ সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারি থেকে নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ কাজ শুরু করা হবে বলে ডিপিই’র নিয়োগ শাখা থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরু হয়ে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে আবেদন প্রক্রিয়া, সেখানে ১০ হাজার আসনে প্রায় ১২ লাখ আবেদন জমা পড়ে। পরে মামলা জটিলতায় এ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এরপর পুল ও প্যানেলের সকল শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে গত ৩০ মার্চের মধ্যে এসব শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনার ভিত্তিতে দেশের সব জেলা থেকে শূন্য আসনের তালিকা সংগ্রহ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে প্রাথমিক ও শিক্ষা অধিদফতর।
জানা গেছে, সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি শূন্য রয়েছে। তার মধ্যে ১৭ হাজার পুল ও প্যানেল শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ডিপিই’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. রমজান আলী জাগো নিউজকে বলেন, ২০১০ সালের স্থাগিত সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এ কার্যক্রম শেষ করা হবে। চলতি সপ্তাহে সভা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষক সংকট দূরীকরণে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা পুল-প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করেছি। বয়স উত্তীর্ণ হওয়ায় সাতজন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আমরা লিখিভাবে আদালতকে জানিয়েছি। ফলে এখন নতুন করে শিক্ষক নিয়োগে আর কোনো জটিলতা নেই।
তিনি বলেন, সারাদেশের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে সহকারী শিক্ষক সংকট রয়েছে। এ কারণে স্থগিত নিয়োগ কার্যক্রম শেষে শূন্য আসনগুলোতে নতুন করে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।