দেশের প্রতিটি উপজেলার একটি করে সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহন কলেজের হীরকজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার শিক্ষাখাতে উন্নতি করছে। দেশে এখনো পর্যন্ত যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়নি, সে সব উপজেলার একটি করে সরকার স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
যুগোপযোগী শিক্ষার প্রতি বর্তমান সরকারের দৃষ্টি রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা মেধাবী। তাদের মেধা বিকাশের সব চেষ্টা করছে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। একসময় সিলেটে শিক্ষার হার সবচেয়ে কম ছিল। সিলেটের শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে এখান থেকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী সিলেটকে শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’
অর্থমন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি শিক্ষার জন্য আন্তরিক। শিক্ষাখাতে তিনি অর্থছাড়ে কার্পণ্য করেন না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার টার্গেট নিই। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে শিক্ষার হার কমিয়ে দেয়। বর্তমানে আমরা আবারও শিক্ষার হার এগিয়ে নিচ্ছি।’
ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রাম বাংলায় বিত্তবানদের সাথে সাথে অনেক সাধারণ মানুষও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। দেশের শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত পর্যায়ে উন্নীত করতে সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে সিলেটের মদনমোহন কলেজে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হন। এসময় প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ সিলেটের আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ওই কলেজে গিয়েছেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে মদনমোহন কলেজকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। কলেজের প্রতিটি ভবন রং করা হয়েছে নতুনভাবে। কলেজ প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয়েছে অনুষ্ঠান মঞ্চ।
আশপাশের দেয়ালগুলোও সাজানো হয়েছে নানা রঙে। কলেজ গেইটসহ রিকাবীবাজার-লামাবাজার সড়কে নির্মাণ করা হয়েছে বেশ ক’টি তোরণ। এতে শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সাঁটানো ব্যানার-ফ্যাস্টুন।
মঞ্চের সামনে নির্মাণ করা হচ্ছে নিরাপত্তা বেষ্টনী। সাউন্ড সিস্টেমসহ আনুষঙ্গিক অন্যান্য কাজও সম্পন্ন করা হয়েছে ইতোমধ্যেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও কলেজ প্রাঙ্গণে নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এর আগে তিনি সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটের সময় সিলেটে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি ১২টা ২০ মিনিটের সময় হজরত শাহজালাল মাজারে ঢুকেন। মাজার জিয়ারত শেষে ১২টা ৫০ মিনিটে তিনি শাহপরাণ মাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ১২টা ৫৭ মিনিটের সময় প্রধানমন্ত্রী শাহপরান মাজারে উপস্থিত হন। বেলা সোয়া ১টায় মাজার জিয়ারত শেষে তিনি মদনমোহন কলেজের উদ্দেশে যাত্রা করেন।