বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক ছাপানো ও বিদ্যালয়ে পৌঁছানোর কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘১ জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালন করা হবে। ওইদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।’
সচিবালয়ে মঙ্গলবার নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।
এবার প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, এসএসসি ভোকেশনাল মিলিয়ে মোট ৪ কোটি ৪৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২৮ শিক্ষার্থীকে ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০টি বিনামূল্যের বই বিতরণ করা হবে। মোট বিষয় ২৯১টি বলে জানান নুরুল ইসলাম নাহিদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১ জানুয়ারি আমরা পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালন করব ও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ করব। বলা হচ্ছে, কিছু বই ছাপা শেষ হয়নি। প্রাথমিকের কিছু বইয়ে সমস্যা ছিল। এ বই ছাপার কাজ একটু দেরিতে শুরু করতে হয়েছে। সেই বই ছাপার কাজও সম্পন্ন হয়েছে।’
এর আগে ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনামূল্যের বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে জানান নাহিদ।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চয়তা দিয়ে বলছি, আমাদের সকল বই ছাপা সম্পন্ন হয়েছে। সব বই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করছি, আমাদের বই যথাসময়ে পৌঁছে গেছে।’
৫ শতাংশ বই সব সময় সংরক্ষণ করা হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও হয়তো ছাত্র বেশি হয়, কোথাও গরমিল হয়। এতে কোনো ঝুঁকি যাতে না থাকে। কোনো বাচ্চা যাতে মন খারাপ করে না যায় এ জন্য এ বই রাখা হয়। সেই বইগুলো হয়তো কোথাও দেরিতে যাচ্ছে। আমাদের মূল বই চলে গেছে।’
‘সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, ১ জানুয়ারি শুক্রবার কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে না। উৎসব করে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে বই নিয়ে বাড়ি যাবে। আমরা সব জায়গায় বলেছি, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাবিদরা যেন ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করতে তাদের পাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যান,’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকার গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল মাঠে ১ জানুয়ারি সকাল ৯টায় পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালন করা হবে। সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।’
বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপায় ইতোমধ্যে নিম্নমানের অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এগুলোর বিষয়ে আমাদের নিয়ম-নীতি আছে। পরীক্ষা করে যদি দেখি বইগুলো ঠিকভাবে ছাপা হয়নি, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। এটা চুক্তিতেই আছে। বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
চলতি মাসের মধ্যে বেতন-বৈষম্য নিরসন করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এ পরিস্থিতি চলতে পারে না। আমি পরশু দিন (রবিবার) শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে অর্থ সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে বেতন-বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক আয়োজন করতে বলেছি। তিনি একমত হয়েছেন সভাটা ডাকা দরকার। সেই বৈঠকে আলোচনা করে কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায় সেই উদ্যোগ আমরা নেব। আমি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলব।’