সকাল বেলা মিরপুর থেকে বাসে উঠলেন বসুন্ধরা যাবেন। বাসের ড্রাইভার খুবই ফাউল। দুই মিনিট পর পর যেখানে সেখানে বাস থামায় পনের-বিশ মিনিট ধরে বসে থাকে। মানুষের কত কাজ আছে – অফিস করবে, ক্লাসে যাবে, পরীক্ষা দিবে, কেউ আবার ডেটিং করবে। অথচ ড্রাইভার সবার টাইম নষ্ট করতেছে। এইভাবে চার-পাঁচবার বাস থামালে বাসের সব যাত্রী চিল্লাফাল্লা শুরু করে দিবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে, হাতে একদম সময় নাই।
এই দুনিয়াতেও আপনি অল্প সময়ের জন্য আসছেন। আপনার হাতেও খুব বেশি সময় নাই । বাসের ড্রাইভার সময় নষ্ট করলে আপনার গায়ে লাগে। অথচ নিজের জীবনের ড্রাইভিং সীটে বসে নিজেই নিজের সময় নষ্ট করতেছেন। দিনের পর দিন মাসের পর মাস আপনার লক্ষ্যের জন্য কাজ না করে, চেষ্টা না করে, আলতু ফালতু কাজে বসে বসে টাইম পার করতেছেন। একটুও খারাপ লাগে না। একটুও নিজের প্রতি চিল্লাচিল্লি করেন না। নিজের হেয়ালিপনার জন্য আক্ষেপও লাগে না।
আপনি কিন্তু এমন ছিলেন না। ছোট বেলায় স্কুলের পড়ালেখা, হোমওয়ার্ক সবই কিন্তু ঠিক সময়ে করে ফেলতেন। এখন কেন করতে পারতেছেন না? কারণ এখন আপনার পিছনে চিল্লাচিল্লি করার জন্য আপনার আম্মু নেই। নরমে গরমে বুঝিয়ে শুনিয়ে, কখনো আদরে, কখনো শাসন করে আপনার কাছ থেকে কেউ ডেইলির কাজ ডেইলি আদায় করে নেয় না।
এখন আম্মুর চিল্লাফাল্লা নাই বলে আপনার কাজ ঠিক মত করা হয় না। লাইফের টার্গেট হাসিল করার জন্য, নিজেই নিজেকে আম্মুর মত শাসন করতে হবে। কখনো পিছায় পড়লে রাত জেগে এক্সট্রা পরিশ্রম করে কাজ আগায় রাখতে হবে।
আপনার মত একই টার্গেটের মানুষদের খুঁজে বের করে তাদের সাথে একই বাসে উঠতে হবে। যাতে তাদের কাজ, তাদের গতি, তাদের চিন্তাভাবনা দেখে নিজের ভিতরে স্পৃহা জাগাতে পারেন। তাদের কাছ থেকে হেল্প পেতে পারেন। নিজের প্রয়োজন নিজে না বুঝলে, অন্য কেউ আদর করে গিলায় খাওয়াই দিবে না। আর ঘড়ির কাটাও থেমে থাকবে না। অযথা সময় নষ্ট করলে, জীবন সায়াহ্নে ডায়রির পাতায় শুধু আক্ষেপই থাকবে। অর্জন থাকবে না।