জীবনে সফল না হলে, দুশ্চিন্তা নয়! যথেষ্ট মনের জোর, ইচ্ছাশক্তি, সময়মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং কিছু অভ্যাস বদলালেই গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব।
সিদ্ধান্তের সঠিক চাবিকাঠি
প্রথমত ঠিক করতে হবে আপনি কী চান? এবং কতটা চান৷ ‘‘হয়তো ভালো হবে, কিংবা আবার চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে, অথবা ঠিক বুঝতে পারছিনা৷’’ এইরকম চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে৷ সোজা কথা – সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে৷ অর্থাৎ হবে, হতে পারে বা চেষ্টা করা যেতে পারে কিংবা নাও হতে পারে – এই ধরনের ভাবনা একেবারেই নয়!
আপনি কী কী চান আর কী চান না !
আপনি যেসব করতে চান বা একেবারেই পছন্দ নয় সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন৷ যেমন, চাকরির ক্ষেত্রে নিজের শহর ছেড়ে অন্য স্থানে যেতে চাননা, পড়াশোনার ক্ষেত্রে ডাক্তারী আপনার একদমই ভালো লাগেনা৷ কিংবা বিদেশে যেতে চান অথবা সহপাঠীকে বিয়ে করবেন না ইত্যাদি৷ অপছন্দের বিষয়গুলো বাদ দিয়ে পছন্দের তালিকা ছোট হলে স্বাভাবিকভাবেই সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে৷ বলেন, মেন্টাল কোচ এবং মোটিভেশন এক্সপার্ট টোমাস শ্লেস্টার৷
নতুন অভ্যাসের শুরু
গবেষকদের মতে, নেতিবাচক নতুন কিছুতে অভ্যস্ত হতে মানুষের কমপক্ষে ২১ দিন বা তিন সপ্তাহ সময় লাগে৷ সাফল্য অর্জনের প্রথম শর্ত শারীরিক বা মানসিকভাবে ফিট থাকা আর সে জন্য প্রয়োজন ব্যায়াম৷ তাই শোবার সময়ই বিছানার সামনে পুরনো স্যান্ডেলের বদলে ব্যায়াম করার জুতো রেখে দিন৷ প্রথমদিকে ব্যাপারটা এলোমেলো মনে হলেও সপ্তাহ তিনেক পরে অভ্যাস হয়ে যাবে এবং সেটাই তখন ঘুম থেকে উঠেই দাঁত ব্রাশ করার মতোই স্বাভাবিক মনে হবে৷
নিজের সাথে কথা বলুন
প্রথমদিকে নিজের কাছে পাগল বলে মনে হলেও তা সত্যিই খুব কাজে দেয়৷ সাধারণত ফুটবল বা বড় বড় খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে শোনা যায়, যারা খেলায় অবশ্যই জিততে চান তারা খেলার সময় মাথায় নিজের মনের শক্তি সাহস বাড়ানোর জন্য নিজের কানকে শুনিয়ে বলেন, আমি পারবো, আমি জিতবোই, পারতে আমাকে হবেই, অন্যরা পারলে আমি পারবোনা কেন? ইত্যাদি৷ তাই এ পরামর্শ অন্যদের ক্ষেত্রেও কাজে লাগতে পারে৷
স্বাস্থ্যকর খাবার
মনে মনে ভাবুন, আপনার পুরনো খারাপ অভ্যাসগুলো বদলে গেলে নতুন ইতিবাচক অভ্যাস হয়ে গেলে কী রকম হবে সুন্দর আপনার জীবন, আপনি কী কী করবেন ইত্যাদি৷ অর্থাৎ পজিটিভ ভাবনাগুলোকে মাথায় নিয়ে আসুন৷ খাবারের ব্যাপারেও সতর্ক হয়ে শরীরে জন্য যা ভালো, অর্থাৎ বুঝে শুনে স্বাস্থ্যকর খাবার খান, তখন শারীরিকভাবেও ভালো বোধ করলে সব ভাবনাচিন্তাই পজিটিভ মনে হবে৷ নিজে গান গান, জোরে হাসুন – জীবনকে সহজ মনে হবে৷
ধৈর্য হারাবেন না!
‘তাজমহল’ যেমন একদিনেই তৈরি হয়নি তেমনি কিন্তু সাফল্যও একদিনে আসেনা৷ এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য৷ তাই প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়ে যান আর তার অগ্রগতি উপভোগ করুন৷ তবে নিজেদের গন্তব্যের কথা কখনো কিন্তু ভোলা যাবেনা৷ তাছাড়া প্রতিটি দিন মানুষের একরকম কাটেনা৷ তাই মনে রাখতে হবে, ধৈর্য হারিয়ে ফেললে সাফল্যের পুরো প্ল্যানটাই কিন্তু মাটি !
টিমওয়ার্ক
আজকের এই প্রতিযোগিতার যুগে বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে সাথে নিয়ে সময়ের সাথে মানিয়ে চলতে হবে৷ হোক তা লেখাপড়া, চাকরি বা পরিবার বা বন্ধু৷ এই যুগে জীবনে সফল হতে হলে ‘টিমওয়ার্ক’ – বড় ব্যাপার৷ তবে সবকিছু করতে হবে নিজেকে যন্ত্র না ভেবে ঠান্ডা মাথায় এবং স্ট্রেস বাদ দিয়ে৷ নিজেকে সেভাবে তৈরি করলে কোনো স্ট্রেসই আর স্ট্রেস বা চাপ বলে মনে হবেনা৷
আনন্দ খোঁজার চেষ্টা
‘যে পরিবেশেই হোক না কেন,সবকিছুর ভেতরই কিছুটা আনন্দ খোঁজার চেষ্টা করলে জীবন অনেক সুন্দর ও সহজ হতে পারে’ – পরামর্শগুলো দিয়েছেন জার্মানির মেন্টাল কোচ এবং মোটিভেশন এক্সপার্ট টোমাস শ্লেস্টার, যিনি গত ২০ বছর ধরে জার্মানির সফল ও বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং খেলোয়াড়দের পরামর্শ দিচ্ছেন৷