শিক্ষাক্ষেত্রে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে অুনষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় এ মতামত দেন বক্তারা।
পাবলিক পরীক্ষায় নম্বর বাড়িয়ে দিতে শিক্ষাবোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে পরীক্ষক-শিক্ষকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আবার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে। হাজার হাজার জিপিএ-৫ দিয়ে দেশে হাজার হাজার ‘মাকাল ফল’ তৈরি করা হচ্ছে। এ অবস্থার উত্তরণে বোর্ডভিত্তিক পরীক্ষার পরিবর্তে বিদ্যালয়ভিত্তিক পরীক্ষা চালু করতে হবে। বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে, বিদ্যালয়ই সনদ দেবে।
তারা বলেন, নম্বর দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় যে অরাজকতা চলছে, তা দেশের সামগ্রিক অরাজকতারই বহিঃপ্রকাশ। জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশের শিক্ষার বর্তমান হালচাল’ শীর্ষক এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োাজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। শিক্ষাবিদ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাবেক বিচারপতি ও শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাপারে সরাকরি ভাষ্য যাই হওক না কেন, জনমনে এমন একটি ধারণা গড়ে উঠেছে যে, কৃত্রিমভাবে পাসের হার বাড়ানো হয়েছে। অনেকের দাবি হল, শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। সরকার শিক্ষাখাতে তার সাফল্য দেখাতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভালো ফল দেখাতে চায় বলে অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার মানোন্নয়ন না হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকে কোচিং বাণিজ্য, হাইড বই নির্ভরতা ও মুখস্থ বিদ্যার প্রাধান্যকেও দায়ি করেন। এরসঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রবণতা। শিক্ষাখাতের বরাদ্দও খুব কম।
গোলটেবিল আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান। সঞ্চালনা করেন সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
লিখিত মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজনের প্রধান সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
আলোচনায় অংশ নিয়ে শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, স্কুলের অধীনেই পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া সনদ ইস্যুর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পৃথিবীর বহু দেশে এ উদাহরণ আছে। তবে শিক্ষাবোর্ড থেকে নম্বর বাড়িয়ে দিতে বলা হয় না। মোট শিক্ষার্থীর কত শতাংশ জিপিএ-৫ পাচ্ছে? তথ্যভিত্তিত কথা না বলে ঢালাও অভিযোগ উপস্থাপন কাম্য নয়।
তিনি বলেন, শিক্ষাখাতে রাতারাতি কোনো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, শিক্ষার প্রকৃত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে না পারলে সমাধান জীবনেও মিলবে না।
বুয়েটের সাবেক উপাচার্য আবদুল মতিন পাটওয়ারী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অনুকরণে বর্তমান গ্রেডিং পদ্ধতি করা হয়েছে। কিন্তু গ্রেডিংয়ের নম্বর বিভাজনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুকরণ করা হয়নি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ৮০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরই সবই রাজনৈতিক বিবেচনায়।
সৌজন্যেঃ সমকাল