বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত খবরগুলোর মধ্যে ‘জিকা ভাইরাস’ অন্যতম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জেসি’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে।
জীবনযাত্রাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই অবলম্বনে জানানো হলো জিকা ভাইরাসের সাতটি জরুরি বিষয়ের কথা। যেগুলো জানা জরুরি।
১. জিকা ভাইরাস এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। এডিস মশা থেকে ডেঙ্গুজ্বরও হয়।
২. যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে জিকা ভাইরাস। সম্প্রতি এক মার্কিন গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে।
৩. জিকা ভাইরাসের লক্ষণগুলো হলো মাথাব্যথা, জ্বর, গাঁটে ব্যথা, র্যাশ, পেশিতে ব্যথা, চোখ লাল হওয়া ইত্যাদি। এই সবগুলো লক্ষণ যদি দুই থেকে সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জ্বর কমানোর এবং ব্যথা প্রশমনের ওষুধ খেতে হবে। আর বিশ্রাম নিতে হবে।
৪. জিকা ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে গবেষকরা ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছেন। এ ছাড়া যে দেশে জিকা ভাইরাস রয়েছে সে দেশে ভ্রমণে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৫. সাধারণ মানুষের বেলায় বিষয়টি খুব মারাত্মক না হলেও জিকা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় গর্ভের শিশু। শিশু ছোট মাথা নিয়ে জন্মায়। এতে শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে। এদের বুদ্ধির বিকাশ কম হয়।
৬. ১৯৪৭ সালে উগান্ডার জিকা অরণ্যে এটি প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল। তাই একে ভাইরাসকে জিকা ভাইরাস বলা হয়। বর্তমানে এই রোগে আক্রান্ত বেশির ভাগ লোকই দক্ষিণ আমেরিকার বাসিন্দারা। এর আগে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মিসর, সেনেগাল ও আইভরি কোস্টে এর প্রার্দুভাব দেখা গিয়েছিল। তবে এবার এটি ব্রাজিল থেকে ছড়াতে শুরু করেছে।
৭. জিকা প্রতিরোধে মশারোধী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমানো, ফুলহাতা জামা-কাপড় পরা, ঘর পরিষ্কার রাখা-এই কাজগুলো করতে হবে। এ ছাড়া ফুলের টব, টয়লেট প্রভৃতি জায়গায় পানি জমতে দেওয়া যাবে না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দেশে জিকা ভাইরাসের ঝুঁকি এখনো তেমন নেই। তবে যেহেতু এ দেশে এডিস মশা রয়েছে জিকা ভাইরাস ছড়াতে পারে। জিকা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় অনাগত শিশুর। শিশু ছোট মাথা নিয়ে জন্মায়। শিশুটি পরে হাবাগোবা হতে পারে। তবে সতর্ক থাকতে মশা প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’