ট্রেজারি চালান, সরকারি চালান, ব্যাংক ড্রাফট ও পে অর্ডারের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যে টাকা প্রদান করা হয় তার সবটাই দেয়া যাবে ঘরে বসেই। এসব কাজ করতে যে সময় ও শ্রম ব্যয় হতো সেটা আর হবে না। কয়েক মিনিটেই এ কাজ সারা যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, এ বছরই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না ট্রেজারি চালানের ব্যবহার। তবে এটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘ই-পেমেন্ট গেটওয়ে’। ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রকল্পের (এফএসএসপি) আওতায় বাস্তবায়নাধীন কয়েকটি প্রকল্পের মধ্যে এটি অন্যতম। উৎপাদনশীল খাতে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ সুবিধা সৃষ্টির জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩৫ কোটি ডলারের এফএসএসপি তহবিল গঠন করেছে। এই টাকায় উৎপাদনশীল খাতে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেয়ার পাশাপাশি ই-পেমেন্ট গেটওয়ের কাজ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন ধরনের ট্রেজরি চালান ও সরকারি চালান দ্বারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগার বা সংশ্লিষ্ট গ্রহীতা অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা দেয়া যায়। আর ব্যাংক ড্রাফট ও পে অর্ডারের দ্বারা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সব ব্যাংকে গ্রহীতার অ্যাকাউন্টে প্রয়োজনীয় টাকা জমা দেয়া যায়। এতে অনেক বেশ সময় লেগে যায়।
ট্রেজারি চালান, ট্যাক্স প্রদান, বিভিন্ন ইউটিলিটি (ওয়াসা, বিদ্যুৎ বিল, পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য সেবা বিল) বিলসহ সরকারের কোষাগারে জমা হয় এমন সব টাকাই এখন জমা দেয়া যাবে এ প্রক্রিয়ায়। ইন্টারনেটে গ্রাহকরা এ সেবা নিতে পারবে খুব সহজেই। যে কোনো পেমেন্ট করা যাবে ঘরে বসেই। এতে করে ই-কমার্স ব্যবসায় অন্যরকম গতি আসবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
ব্যবস্থাটি পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় হওয়ায় আর কাগজপত্রের জটিলতা থাকবে না। একটা ট্রেজারি চালান জমা দিতে যেখানে বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে দুই বা তিনদিন লাগতো, সেখানে এ কাজ হবে মাত্র কয়েক মিনিটেই।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকে কোনো গ্রাহক চালান বা ট্রেজারি বিল জমা দেয়ার পর একটা সময়ে সব হিসাব একত্রে করে তা আবার অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে রিপোর্ট প্রেরণ করতে হয়। এটি হওয়ার ফলে কেউ যখন পেমেন্ট করবে তা সঙ্গে সঙ্গেই সে তথ্য চলে যাবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংককে আর আলাদা করে তথ্য সরবরাহ করার প্রয়োজন হবে না।
জানা গেছে, কাজ শুরু হবে চলতি বছরের শেষ নাগাদ। এটি ঠিকঠাক পরিচালনার জন্য প্রথমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটাসেন্টার আপগ্রেড করা হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার কাজ চলছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা বাংলামেইলকে বলেন, ‘ই-পেমেন্ট গেটওয়ে চালু হলে কাউকে আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চালান জমা দিতে আসতে হবে না। এটি মানুষ ঘরে বসেই করতে পারবে; যা হবে ই-পেমেন্ট। ইউটিলিটি বিলগুলো প্রদান করা হবে। এনবিআর রাজস্ব আদায় হবে অনলাইনের মাধ্যমে, যা সরাসরি সরকাকি কোষাগারে জমা হবে।’