শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কোনো কোনো শিক্ষক ক্লাসে শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে না পড়িয়ে কোচিংয়ে বাধ্য করছেন। শিক্ষার্থীদের নোটবই পড়তে উদ্বুদ্ধ করা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়মিত উপস্থিতিসহ নানা অভিযোগও রয়েছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। তারা মনে করেন, ক্লাসে পড়ালে কোচিং-প্রাইভেটে শিক্ষার্থীরা আসবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ মিলনায়তনে সারাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মূল্যায়ন প্রতিবেদন-২০১৫ প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে দেশের সব জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মাধ্যমিকে ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী মোটামুটি দক্ষতা অর্জন করছে। অধিক দক্ষতা অর্জন করছে ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর ১৯ শতাংশ প্রয়োজনীয় দক্ষতারও অনেক নিচে। তবে বাংলা ও ইংরেজিতে ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা। আর গণিতে এগিয়ে আছে ছাত্ররা। সবচেয়ে ভালো করছে রাজশাহী বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আর সবচেয়ে পিছিয়ে সিলেট বিভাগ। সাধারণ শিক্ষার চেয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা খুব একটা পিছিয়ে নেই।
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার এ অবস্থার কারণে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের দোষারোপ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা সকাল ৭টায় বাড়ি থেকে স্কুলে আসে এবং কোচিং করে ক্ষুধার্ত হয়ে বাড়ি ফেরে।’
তিনি বলেন, ‘পাবলিক পরীক্ষায় এমপিওভুক্ত অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হতাশাব্যঞ্জক ফল দেখা যায়। তাহলে তাদের পেছনে কেন আমরা সরকারি অর্থ খরচ করব? নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্বলতা জানার জন্য পাবলিক পরীক্ষার ফল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো না, অনেক আগেই ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’
মাঠপর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নাহিদ বলেন, ‘কিছু কলেজ থেকে একজনও পাস করেনি। মাত্র একজন পরীক্ষা দিয়ে একজনই ফেল। তাহলে আপনি কী পরিদর্শন করলেন?’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘কেউ নোটবই থেকে প্রশ্ন করলে তা বাতিল করা হবে এবং তাকে শাস্তি পেতে হবে। এছাড়া লম্বা সময়ের পরীক্ষাও কমিয়ে আনা হবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, টিকিউআই প্রকল্প পরিচালক জহির উদ্দিন বাবর, সেকায়েপের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মাহামুদুল হক প্রমুখ।
সূত্র: সমকাল