নিজেকে আরো কর্মক্ষম করার কথা ভাবছেন? নিজের দিনগুলোকে করতে চাচ্ছেন আরো ফলপ্রসূ? তাহলে নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণ করুন। প্রতিদিন আরো বেশি কাজ করতে এগুলো সহায়তা করবে।
১. দিনের কার্যসূচি লিখুন
খুব সকালে ঘুম থেকে উঠার পর প্রার্থনা করে স্রষ্টাকে স্মরণ করুন। তারপর সারাদিনের কর্মপরিকল্পনা লিখুন। যদি না লিখেন তাহলে কিছু সময় পর আপনি ভুলে যাবেন কী করতে চেয়েছিলেন সেটা। কাউকে কথা দিলে, কোথাও যেতে চাইলে তার একটা আলাদা তালিকা তৈরি করুন।
নিজের দৈনন্দিন কর্মপরিকল্পনার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী দু’টি তালিকা প্রণয়ন করুন। পরিকল্পনাগুলো টুকে রাখার মানেই হচ্ছে মাঝে মাঝে আপনি এগুলো দেখার এবং মূল্যায়ন করার সুযোগ পাবেন। কোন কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন আর কোনগুলো সম্পন্ন করতে পারেননি তার একটা হিসাব নিজেই করতে পারেবেন।
পরিকল্পনা লেখার জন্য আপনি নোটবুক ব্যবহার করতে পারেন। আবার ব্যবহার করতে পারেন গুগল ডকুমেন্টস অথবা আপনার ফোনের কোনো অ্যাপস।
২. গুরুত্ব অনুসারে পাঁচটি কাজ বাছাই করুন
আপনার দৈনন্দিন কার্যতালিকা হতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি কাজ বাছাই করুন। এগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হলে আবার কার্যতালিকাতে চোখ বুলিয়ে নিন। সেখান থেকে আরো পাঁচটি কাজ বাছাই করুন। এভাবে সব কাজ সফলভাবে শেষ করুন। কাজের ফাঁকে একটু বিরতি নিতে পারেন।
দিনশেষে দেখবেন আপনার কার্যতালিকার সব কাজ সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। অবিশ্বাস্য মনে হলেও আপনি পেরেছেন। এভাবে ধাপে ধাপে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান।
৩.এক সাথে একাধিক কাজ করবেন না
অনেকে আছেন একই সময় অনেকগুলো কাজ করার চেষ্টা করেন। মনে করেন মাত্র একটি কাজ নিয়ে বসে থাকা মানে সময়ের অপচয়। আসলে বিষয়টি তা নয়। বরং একত্রে অনেক কাজ করলেই বরং সময়ের অপচয় হয়। কোনো কাজগুলো সুন্দরভাবে সমাপ্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় কাজও যথাযথ মানের হয় না। কারণ একই সময় একাধিক কাজ করলে মনযোগ কেন্দ্রীভূত করা যায় না। আর সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মানের কাজ হয় না। সেজন্য- ব্লগ লেখা কিংবা বই পড়ার সময় টিভি দেখবেন না। নারীরা থালা-বাসন পরিষ্কারের সময় বাচ্চাকে খাওয়াবেন না। এতে সময় অপচয় হবে। দুটো কাজের একটিও ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন না।
৪. কাজের সময় নির্ধারণ করুন, মাঝে ব্রেক দিন
কোনো কাজে সম্পন্ন করার জন্য সময় নির্ধারণ করুন। কাজ শেষে সামান্য ব্রেক নিন। কোনো কাজ বেশি সময় ধরে করতে হলে মাঝেও দুয়েকটি ব্রেক নিন। ধরুন, আপনি ইমেইলের উত্তর দিতে চাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে নিজেকে বলুন, ৩০ মিনিটের মধ্যে মেইলের উত্তর দেয়া শেষ করতে হবে। কাজ শেষ করে আপনি ৫ মিনিট ব্রেক নিন। এসময় মোবাইলে কোনো শিক্ষামূলক গেম খেলতে পারেন। আবার মোবাইল বা ঘরের অপ্রয়োজনীয় কিছু বাছাই করে ফেলে দিতে পারেন। অথবা বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে নিজের ভালো কোনো স্মৃতির কথা ভাবতে পারেন। এতে করে আপনার ব্রেইন কিছুটা বিশ্রাম পাবে। ফলে পরবর্তী কাজে আপনার মনযোগ বাড়বে। তবে মনে রাখবেন, সময়টা যেন পাঁচ মিনিটের বেশি না হয়।
৫. ভালো কাজের পর নিজেকে পুরস্কৃত করুন
এভাবে একটি ভালো দিন অতিবাহিত করতে পারলে নিজেকে ছোট-খাটো পুরস্কার দিন। আর বড় কোনো প্রজেক্ট বা প্রকল্প শেষ করতে পারলে বড় পুরস্কার দিন।
ছোটো পুরস্কার এমন হতে পারে-
* নিজের পছন্দ মতো কিছু একটা গান শুনুন অথবা গেম খেলুন
* পরিবারের সাথে ভালো একটা ডিনার করুন
* পছন্দসই কোনো টিভি শো’য়ের একটি কিংবা দুটি পর্ব দেখতে পারেন
* রাতে পছন্দের একটা বই বা ম্যাগাজিন পড়তে পারেন।
* পছন্দের কাউকে নিয়ে বাইরে কোথাও বেরিয়ে আসতে পারেন
* নিজের বাবা-মা অথবা পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে পারেন।
বড় পুরস্কার-
* সাজসজ্জার কোনো আইটেম
* পরিবার নিয়ে কোনো পর্যটন স্পট বা আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে বেড়িয়ে আসুন
* বন্ধুদের সাথে কোথাও পিকনিকে যেতে পারেন
* কোনো স্কুল শিশু-শিক্ষার্থীদের সাথে একটি দিন কাটাতে পারেন
আর কী পুরস্কার হতে পারে তা জানাতে পারেন মন্তব্যে। ভালো থাকুন। আপনার ভবিষ্যৎ জীবন হোক আরো ঝলমলে
সূত্র: নয়াদিগন্ত