বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী থেকে শুরু করে স্বল্প শিক্ষিতদের জন্যও কাজের সুযোগ আছে ওয়ালটনে। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দিন দিন প্রতিষ্ঠানটির পরিসর বাড়ছে, সঙ্গে বাড়ছে কাজের সুযোগ। সারা দেশে ওয়ালটনের নিজস্ব আউটলেট আছে দুই শতাধিক, সার্ভিস সেন্টার আছে ৭০টি। গাজীপুরের চন্দ্রায় ৩৬০ বিঘা জমির ওপর নির্মিত কারখানায় নিয়মিত বিভিন্ন পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস ও অটোমোবাইল পণ্য উৎপাদন করার কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কাজের বেশি সুযোগ পান প্রকৌশলীরা। বিএসসি ও ডিপ্লোমা-উভয় ধরনের প্রকৌশলীই সুযোগ পান। সার্ভিস সেন্টারগুলোতে বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়ার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ান। দ্রত ব্যবসা সম্প্রসারণের কারণে বিশেষ করে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে প্রকৌশলীদের কাজের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। সেলস ও মার্কেটিং, অডিট, মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগে বিভিন্ন সময় প্রয়োজন হয় নতুন লোকবলের। দেশ-বিদেশ থেকে কাঁচামাল কেনাকাটার জন্যও লোকবলের প্রয়োজন হয়। কম্পানির আইনগত নানা সমস্যার সমাধানের জন্য নিয়োগ পান আইনজীবীরা।
ওয়ালটনে বছরে কত লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে?
সবার জন্য কাজের সুযোগ আছে ওয়ালটনে। প্রতিবছরই ওয়ালটন তার পণ্যের উৎপাদন বাড়াচ্ছে, ফলে বাড়ছে কাজের সুযোগ। প্রতিবছর আমাদের কম্পানিতে নতুন এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। বর্তমানে কাজ করছে ১৫ হাজার কর্মী। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রবেশ করেছে ওয়ালটন, নতুন নতুন দেশে প্রবেশ করছে আমাদের পণ্য। বর্তমানে বিশ্বের ২০টি দেশে ওয়ালটনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তাই বিদেশে ওয়ালটনের আউটলেটে বাংলাদেশিদের কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
ফ্রেশার বা নতুনদের জন্য কেমন সুযোগ?
প্রতিবছর আমাদের নিয়োগের একটি বড় অংশে সুযোগ পান সদ্য পাস করা শিক্ষার্থীরা। ফ্যাক্টরি ও আউটলেটে নতুনরা নিয়োগ পান। তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলি।
বছরের কোন কোন সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়?
বছরজুড়ে আমাদের কোনো না কোনো নিয়োগ থাকেই। তবে বছরের শুরুতে-অর্থাৎ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এবং বছরের মাঝামাঝি জুলাই-আগস্টে বেশি নিয়োগ হয়ে থাকে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় আমাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট, জব সাইট ও জাতীয় দৈনিকে।
নিয়োগ প্রক্রিয়ার ধাপগুলো কী কী?
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করেন। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই করে ফোনে লিখিত পরীক্ষার দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ডাকা হয় আইটি টেস্ট এবং ভাইভার জন্য।
এ টেস্ট দুটি একই দিনে হয়ে থাক। আইটি টেস্টে সন্তোষজনক নম্বর পেলে ভাইভা নেওয়া হয়। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং যে পদের জন্য আবেদন করে সে সম্পর্কিত প্রশ্ন করা হয়। বাংলা ও ইংরেজি কম্পোজ, ই-মেইল ব্যবহার, ইন্টারনেট ব্রাউজিং পারে কি না তা দেখা হয় আইটি টেস্টে।
মৌখিক পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন হয়ে থাকে?
বুদ্ধিমত্তা, কাজের আগ্রহ ও পেশাগত দক্ষতা যাচাই করা হয় ভাইভা বোর্ডে। পদ ও কাজের ধরনভেদে প্রশ্নও বদলে যায়। প্রকৌশলী বা টেকনিশিয়ানদের জন্য এক ধরনের প্রশ্ন, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিংয়ের প্রার্থীদের জন্য আলাদা প্রশ্ন। সেলস অ্যান্ড মার্কেটিংয়ে নিয়োগ প্রত্যাশীদের একটি মোবাইল দিয়ে বলা হতে পারে, এটি ওয়ালটনের একটি পণ্য, আপনি সেলস এক্সিকিউটিভ আর আমি ক্রেতা। আমার কাছে বিক্রির জন্য পণ্যটিকে কিভাবে তুলে ধরবেন? ফ্রিজ, এসি কিংবা মোটরসাইকেলের কোনো সমস্যার কথা উল্লেখ করে সমাধান জানতে চাওয়া হতে পারে প্রকৌশলী বা টেকনিশিয়ানদের কাছে।
নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় বেশি গুরুত্ব পায়?
নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা নিয়োগপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি পেশাগত দৃষ্টিভঙ্গি, আত্মবিশ্বাস, ক্ষেত্রবিশেষে অভিজ্ঞতা, সততা, নিষ্ঠার দিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সেলস অ্যান্ড মার্কেটিংয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে বাচনভঙ্গি, কাজের মানসিকতা ও মার্কেটিংয়ে তাদের সক্ষমতার বিষয়টি গুরুত্ব পায়। প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রে কারিগরি জ্ঞান এবং আত্মবিশ্বাস দেখে থাকি। টেকনিশিয়ানদের ক্ষেত্রে তাঁদের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, কাজ শেখার মানসিকতা ও ধৈর্য দেখা হয়।
দক্ষ কর্মী তৈরিতে ওয়ালটন কিভাবে কাজ করে?
সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রথমেই আমরা জব ওরিয়েন্টেশন ও ট্রেনিং অ্যাসেসমেন্ট করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। পরবর্তী সময়ে অধিকতর প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশেও পাঠানো হয়।
কর্মীরা কেমন সুযোগ-সুবিধা পান?
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বছরে একটি ইনক্রিমেন্ট এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষ ইনক্রিমেন্টের ব্যবস্থা করা হয়। বার্ষিক দুটি বোনাস তো আছেই। ফ্যাক্টরিতে কর্মরতদের জন্য তিন বেলা খাবার এবং দুই বেলা নাশতার ব্যবস্থা আছে। এর ৪০-৫০% খরচ কম্পানি বহন করে। ফ্যাক্টরির সবার স্বাস্থ্যসেবার জন্য আছে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। এখানে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কর্মীদের আবাসন সুবিধা দেওয়ারও পরিকল্পনা আছে আমাদের।