কুড়িগ্রামের রাজারহাটে রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক জাল সনদে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্নাতকে তিনি ৫ বিষয়ে ফেল করেও স্নাতক পাসের সনদ জালিয়াতি করে রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের সময় প্রধান শিক্ষকের পদটিতে নিয়োগ নিয়োছেন।
মতিয়ার রহমান নামের ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করা হয়েছে।
রাজারহাট উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র রায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে বিএ পাসের ভূয়া সনদ প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
ওই প্রতিবেদনটি গতকাল রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে দাখিল করেছেন। তবে এখনও প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমান বহাল তবিয়তে রংপুরে ১৮ মাসের ডিপিএড প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।
উল্লেখ্য, রাজারহাট উপজেলাধীন চর গতিয়াসাম বগুড়া পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০১৫ সনে জাতীয়করণ করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমান ৫ বিষয়ে বিএ ফেল করেও একই সনে বিএ পাসের জালিয়াতি সনদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদটিতে আসীন হন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর পক্ষে মো. আব্দুল মজিদ স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ কুড়িগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগ পত্রের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক মতিয়ার রহমানের ভূয়া বিএ পাস সনদ ও টেবুলেশন শীটের কপি সংযুক্ত করা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, রংপুরের কাউনিয়া মহাবিদ্যালয় থেকে মতিয়ার রহমান, পিতা-মো. শাহ আলী প্রামানিক ১৯৯৮ সনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ পাস ও সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নেন এবং টেবুলেশন শীটে দেখা গেছে, বাংলায়-২৬, ইংরেজীতে-২১, ইসলামের ইতিহাস ২য় পত্রে-২৬, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ২য়-৩০ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৩য় পত্রে-২৭ নম্বরসহ ৫টি বিষয়ে তিনি অকৃতকার্য্য হন।
এদিকে ১৯৯৮ সনে কাউনিয়া ডিগ্রী কলেজ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ পাস সাময়িক সনদপত্রে নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২য় বিভাগে উত্তীর্ণ হইয়াছে মর্মে জাল সনদ তৈরী করে বিএ পাস দেখানো হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজারহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতারি পারভীনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিএ পাসের জাল সনদ দাখিলের বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এখন অধিকতর তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, দীর্ঘ তদন্তে তার বিএ পাস সনদটি ভূয়া প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনটি গতকাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে দাখিল করা হয়েছে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমানের মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি রংপুরে ডিপিএড প্রশিক্ষণে রয়েছি। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়া মাত্রই তিনি ফোনটি কেটে দেন।
সূত্র: দৈনিক শিক্ষা