প্রস্তাবিত ‘শিক্ষা আইন-২০১৫’ এর খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে মঙ্গলবার প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ আইনে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাজা ‘কম’ হওয়ায় তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। জনসাধারণের মতামত ও পরামর্শ নিতে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রকাশের আট দিনের মাথায় তা প্রত্যাহার করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
খসড়াটি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পরিমার্জনের জন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় পুনঃবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। এর আগে গত ১৯ অক্টোবর মতামত নিতে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রকাশ করা হয়। ২৯ অক্টোবরের মধ্যে সবার মতামত দেওয়ার কথা ছিল।
পুনঃবিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়, প্রণীত ‘শিক্ষা আইন, ২০১৫’-এর খসড়ার ওপর শিক্ষাবিদ ও সমাজের সর্বস্তরের জনগণ এবং দেশের সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো মতামত বা পরামর্শ থাকলে নির্ধারিত ছকে আগামী ২৯ অক্টোবরের মধ্যে মেইলে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছিল। খসড়া শিক্ষা আইন আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে পরিমার্জন করার প্রয়োজন আছে বিধায় শিক্ষা আইনের কপি ও বিজ্ঞপ্তিটি ওয়েবসাইট থেকে প্রত্যাহার করা হলো।
মন্ত্রণালয়ের আইন কর্মকর্তা (যুগ্ম সচিব) মো. ফারুক হোসেনের স্বাক্ষরে এই পুনঃবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরে শিক্ষা আইনের কপি চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ফের তা প্রকাশ করা হবে।
কোনো ব্যক্তি কোনো পাবলিক পরীক্ষায় প্রশুপত্র ফাঁস বা এর সঙ্গে জড়িত থাকলে সর্বোচ্চ ৪ বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের কথা বলা হয়েছিল প্রকাশিত খসড়া শিক্ষা আইনে।
জানা গেছে, ‘দ্য পাবলিক এক্সামিনেশনস (অফেন্স) ১৯৮০ (অ্যামেন্ড ১৯৯২) অ্যাক্ট’ অনুযায়ী প্রশুপত্র ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্টিø ৪ বছর কারাদণ্ড রয়েছে।
প্রকাশিত খসড়া শিক্ষা আইনে ইংরেজি মাধ্যমসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বেতন ও অন্যান্য ফিস সরকারের অনুমোদন ছাড়া নির্ধারণে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল।
এ ছাড়া কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বিভিন্ন স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলে প্রতিষ্ঠান বল্পব্দসহ সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছিল খসড়া আইনে।
এর আগে ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট শিক্ষা আইনের খসড়া প্রকাশ করে সরকার। কিন্তু সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। সেই খসড়াটি কিছুটা সংশোধন-পরিবর্ধন করে নতুন খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছিল।
অবশেষে প্রশ্ন ফাঁসের খসড়া আইন প্রকাশের সপ্তাহ না ঘুরতেই সমালোচনার মুখে তা প্রত্যাহার করে নিল মন্ত্রণালয়।
সূত্র: সমকাল