বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাংকিং কাজে ভোগান্তি দুর করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে সনাতন পদ্ধতির ব্যাংকিংয়ের পরিবর্তে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবা চালু করতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যাতে করে শিক্ষার্থীরা বা তাদের অভিভাবকেরা অনলাইন, ইন্টারনেট, ই-কমার্স, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খরচ পরিশোধ করার সুযোগ পান।
এ জন্য সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে অনলাইন, ইন্টারনেট, ই-কমার্সসহ প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যাংকিং সেবা চালু করতে হবে তফসিলি সব ব্যাংককে। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা সব ব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং সেবার আওতায় এ নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যাতে আধুনিক ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে শিক্ষাদান-সংক্রান্ত অর্থ পরিশোধ করতে পারে, সে জন্য প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ বা তার নিকটবর্তী স্থানে বুথ স্থাপন বা প্রতিনিধি (এজেন্ট) ব্যাংকিং সেবা চালু করতে হবে। প্রাথমিকভাবে দেশের সব নগর ও জেলা পর্যায়ে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এ ধরনের সেবা কার্যক্রম চালু করতে হবে ব্যাংকগুলোকে। পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও এ সেবার পরিধি সম্প্রসারণ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগ থেকে জারি করা এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সনাতন পদ্ধতিতে শিক্ষাদান সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ধরনের মাশুল জমা নেওয়ার পদ্ধতি বদলাতে হবে।
এখনো দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত এক বা একাধিক ব্যাংকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন খরচ ও মাশুল আদায় করা হয়। এ জন্য নির্ধারিত ব্যাংকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে এসব পাওনা পরিশোধ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কিত আর্থিক সেবাকে আরও সহজ ও ঝামেলামুক্ত করতে হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রযুক্তিনির্ভর ও শিক্ষার্থীদের চাহিদা ভিত্তিতে সেবা কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম মেনে বিদেশি শিক্ষার্থীদেরও ব্যাংক হিসাব খোলা যাবে। যেসব শিক্ষার্থীর বয়স ৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে তাদের জন্য ‘স্কুল ব্যাংকিং হিসাব’ এবং ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা তাদের জন্য ‘সাধারণ ব্যাংক হিসাব’ খুলে এসব সেবা দিতে হবে। কিন্তু স্কুল ব্যাংকিং হিসাব থেকে সরকারি মাশুল ছাড়া অন্য কোনো ধরনের মাশুল বা খরচ আদায় করা যাবে না।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় ‘ওয়ালেট হিসাব’ খুলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যাতে শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিসাবে টাকা জমা দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা কার্যকর হলে ঢাকায় বা অন্য কোনো বিভাগীয় শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর শিক্ষাদানের খরচ প্রত্যন্ত গ্রামে বসেও তাদের অভিভাবকেরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের যেসব বিধিবিধান রয়েছে, সেগুলো পরিপালন করতে হবে