এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে শাহরুখ খান দিতে গিয়েছিলেন সম্মানসূচক বক্তৃতা। সেখানে তাঁকে সান্মানিক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়ে সম্মানিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর, ব্রিটেনের রাজকুমারী। সম্মানিত হওয়ার পর সেখানকার দক্ষিণ-এশিয় ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের জীবনদর্শন থেকে বক্তৃতা দিয়ে অভিভূত করে দেন কিং খান। শেষে সেখানকার অধ্যাপকদের সঙ্গে নাচেন ‘লুঙ্গি ডান্সও’।
শাহরুখ তাঁর বক্তব্যে ছাত্র-ছাত্রীদের বলেছেন,
০১. জীবনে ভাল পারফর্ম করতে প্রত্যেককেই পরিশ্রমী হতে হবে। কোনও নিয়মের বাধনে নিজেকে না বেধে সব পরিস্থিতিতে নিজেকে উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তবে নিজের কাজ করতে গিয়ে কাউকে কখনও আঘাত করা উচিত নয়। অন্যের স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বাঁচা উচিত্ নয়, নিজের স্বপ্নকে সফল করতেই বাঁচা উচিত্।
০২. জীবনে অল্পবিস্তর পাগলামি থাকা উচিত্, কারণ স্বাভাবিকতা থাকলে সেই জীবন প্রাণহীন। সামান্য যে পাগলামি প্রতিটা মানুষের মধ্যে আছে, তা লুকিয়ে না রেখে, তাঁকেই বাঁচার জন্য অনুপ্রেরণা করে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিত্। যেকোনও সৃষ্টিশীল মানুষই কিছু আবিষ্কার করেছেন পাগলামিকে সঙ্গী করে।
০৩. ভীতি বলে মানুষের জীবনে কিছু থাকা উচিত্ নয়। কারণ, নিজের ভেতরের ভীতিকে অনুভব করতে পারলে, জয় করতে পারলেই তবে জীবনে কিছু অর্জন করা সম্ভব।
০৪. ধন্দ জীবনে থাকবেই, তাকে সমাধান করতে পারলেই সুস্পষ্টতা আসবে। সমস্যা সমাধান করার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জীবনে চলার ছন্দ, আনন্দ। নিজের বিভিন্ন ছবি থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে শাহরুখ বলেছেন কোনও কিছুই কাউকে আটকাতে পারে না। মানুষের লড়ার মানসিকতাটাই আসল।
০৫. বেঁচে থাকুন সবসময় নিজের স্বপ্ন নিয়ে। কোন নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ হওয়া উচিৎ নয়।
০৬. যখন সবাই অন্যকেউ বলবে উল্টোদিকে যেতে নিজের পথেই চলতে শুরু করুন কোন প্রকার ধিধা ছাড়া।
০৭. আপনি যদি কোন কিছু করতে বাধ্য না হোন, যদি আপনার তা করতে একেবারেই ইচ্ছে না হয় তবে তা করবেন না।
০৮. ধনী হওয়ার আগে দার্শনিক হওয়া উচিৎ নয়।
০৯. বিভ্রান্ত হওয়ায় কোনো সমস্যা নেই। বিভ্রান্তি পৃথিবীতে কোমলতার পথ।
১০. শিল্প শিল্পীর চাইতে গুরুত্বপূর্ণ। যদি নিজের কোন শিল্প না থাকে তবে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।
বক্তৃতা দেওয়ার পর শাহরুখ তার টুইটারে লিখেছেন, ‘এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ আমার বক্তৃতা ছিলো জীবন ও শিক্ষা নিয়ে। আর এর মাধ্যমে আমি আমার জীবনের সবচাইতে বড় শিক্ষা গ্রহণ করেছি। সত্যিই এটা জাদুর মতো।’