শর্ত পূরণ না করেও ইউনানি-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন কয়েকজন ‘ভাগ্যবান’। আর ‘ভাগ্যবিড়ম্বিতরা’ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও মৌখিক পরীক্ষায় ডাক পাননি। এই ঘটনা ঘটেছে সরকারি খাতে বাংলাদেশের একমাত্র ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা বিভাগের পরিচালক গৌরমণি সিনহা কোনো অনিয়ম হয়নি বলে দাবি করেন। তবে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন এমন তিন পরীক্ষার্থী তথ্য অধিকার আইনে নম্বরপত্র চেয়েছিলেন। নম্বরপত্র বলছে, গৌরমণি সিনহার দাবি অমূলক।
গত বছরের ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিষ্ঠানটিতে মোট ২০ জন প্রভাষকের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর ছিল সাড়ে ৩৭। প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য ওই পরীক্ষায় মেহের নওরোজ, তাহমিনা আক্তার ও শফিকুল ইসলাম পরীক্ষা দেন। ফলাফলে নিজেদের নাম দেখতে না পেয়ে তাঁরা ২৪ ডিসেম্বর খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেন। কিন্তু হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা বিভাগ থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে তথ্য অধিকার আইনে পরীক্ষার খাতা দেখতে চান তাঁরা। খাতা হাতে পেয়ে তাঁরা দেখেন মেহের নওরোজ ৫১, তাহমিনা আক্তার ৫৩ ও শফিকুল ইসলাম ৫২ পেয়েছেন। সরবরাহ করা নম্বরপত্র খতিয়ে দেখা যায়, তাঁদের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও মৌখিক পরীক্ষায় ডাক পেয়েছেন কেউ কেউ।
জানতে চাইলে গৌরমণি সিনহা বলেন, নম্বরপত্রে কোনো পদে নিয়োগ পেতে চান এই ঘরে পরীক্ষার্থীরা একটির বদলে ওএমআর ফরমে তিনটি পদের জন্য বৃত্ত ভরাট করেছেন। অন্য দুটি পদ ছিল মেডিকেল অফিসার ও প্রডাকশন, রিসার্চ ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসারের। মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়া তিন পরীক্ষার্থীর বক্তব্য হলো, বিজ্ঞপ্তিটি ছিল প্রভাষক পদের জন্য।
শর্ত পূরণ না করেও চাকরি হলো যাঁদের: নতুন নিয়োগ পাওয়া সাত শিক্ষকের চারজনের বিরুদ্ধে শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এঁরা হলেন আয়ুর্বেদিক মেডিসিনে সহকারী অধ্যাপক আ জ ম দৌলত আল মামুন, আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান, রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সালাম ও আবাসিক চিকিৎসক মুহাম্মদ জহিরুল হক।
আয়ুর্বেদিক মেডিসিন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগের শর্ত ছিল চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধিত হতে হবে এবং প্রার্থীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে বিএএমএস ও একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজে চার বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সহকারী অধ্যাপক পদে চাকরি পাওয়া দৌলত আল মামুন স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রমাণ হিসেবে দুটি সনদ জমা দিয়েছেন। একটি স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে ডিপ্লোমার। অন্যটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া। ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বিষয়ে বাংলাদেশে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে লেখাপড়ার সুযোগ নেই। স্নাতকের পর ছাত্রছাত্রীরা ভারত বা চীন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি কোর্স করেন। এ ছাড়া তাঁর চার বছর চাকরির অভিজ্ঞতাও ছিল না। কাগজপত্রে দেখা গেছে তিনি মিরপুরে ইউনানি আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে আড়াই মাস শিক্ষকতা করেছেন। মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা যায়নি।
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিকে আবাসিক চিকিৎসক পদে চাকরির শর্ত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিইউএমএস/বিএএমএস ডিগ্রিসহ আট বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা। নিয়োগ পাওয়া মো. আতিয়ার রহমান লেখাপড়া শেষ করেছেন ২০০৭ সালে। ইন্টার্নশিপ সনদ পেয়েছেন ২০০৯ সালে। হিসাব অনুযায়ী চাকরির আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখেও তাঁর আট বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ হয় না। আতিয়ার বলেন, চাকরির শর্ত পূরণ হয়েছে বলেই তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
একই অভিযোগ উঠেছে রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ জহিরুল হকের ক্ষেত্রেও। তিনি আবেদনপত্রের সঙ্গে হাকিম সাঈদ ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে কাজের সনদ জমা দিয়েছেন। ওই সনদ অনুযায়ী জহিরুল ২৮ মার্চ ২০০৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রভাষক হিসেবে কাজ করেছেন। এতে তাঁর অভিজ্ঞতার সময়কাল দাঁড়ায় ছয় বছর দুই মাস। এ পদটিতেও একাধিক যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। জহিরুল হক বলেন, একটি কুচক্রী মহল তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসক মো. আবদুস সালাম চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন ২০০৯ সালে। কিন্তু তিনি ২০০৬ সাল থেকে চিকিৎসক হিসেবে জেনিয়াল ইউনানি ল্যাবরেটরিতে এবং মণিপুর স্কুলে ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত চাকরি করেছেন বলে দেখিয়েছেন। নিবন্ধন ছাড়া চিকিৎসা দেওয়া নিষিদ্ধ হওয়া স্বত্বেও তিনি চিকিৎসা দিয়েছেন এবং ওই সময়কালকেই কাজের অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখিয়ে চাকরি পেয়েছেন। এ বিষয়ে সালাম কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
গত বছরের ১২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিষ্ঠানটিতে মোট ২০ জন প্রভাষকের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর ছিল সাড়ে ৩৭। প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য ওই পরীক্ষায় মেহের নওরোজ, তাহমিনা আক্তার ও শফিকুল ইসলাম পরীক্ষা দেন। ফলাফলে নিজেদের নাম দেখতে না পেয়ে তাঁরা ২৪ ডিসেম্বর খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেন। কিন্তু হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা বিভাগ থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে তথ্য অধিকার আইনে পরীক্ষার খাতা দেখতে চান তাঁরা। খাতা হাতে পেয়ে তাঁরা দেখেন মেহের নওরোজ ৫১, তাহমিনা আক্তার ৫৩ ও শফিকুল ইসলাম ৫২ পেয়েছেন। সরবরাহ করা নম্বরপত্র খতিয়ে দেখা যায়, তাঁদের চেয়ে কম নম্বর পেয়েও মৌখিক পরীক্ষায় ডাক পেয়েছেন কেউ কেউ।
জানতে চাইলে গৌরমণি সিনহা বলেন, নম্বরপত্রে কোনো পদে নিয়োগ পেতে চান এই ঘরে পরীক্ষার্থীরা একটির বদলে ওএমআর ফরমে তিনটি পদের জন্য বৃত্ত ভরাট করেছেন। অন্য দুটি পদ ছিল মেডিকেল অফিসার ও প্রডাকশন, রিসার্চ ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিসারের। মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়া তিন পরীক্ষার্থীর বক্তব্য হলো, বিজ্ঞপ্তিটি ছিল প্রভাষক পদের জন্য।
শর্ত পূরণ না করেও চাকরি হলো যাঁদের: নতুন নিয়োগ পাওয়া সাত শিক্ষকের চারজনের বিরুদ্ধে শর্ত পূরণ না করার অভিযোগ উঠেছে। এঁরা হলেন আয়ুর্বেদিক মেডিসিনে সহকারী অধ্যাপক আ জ ম দৌলত আল মামুন, আবাসিক চিকিৎসক মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান, রেজিস্ট্রার মো. আবদুস সালাম ও আবাসিক চিকিৎসক মুহাম্মদ জহিরুল হক।
আয়ুর্বেদিক মেডিসিন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগের শর্ত ছিল চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধিত হতে হবে এবং প্রার্থীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে বিএএমএস ও একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কলেজে চার বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সহকারী অধ্যাপক পদে চাকরি পাওয়া দৌলত আল মামুন স্নাতকোত্তর ডিগ্রির প্রমাণ হিসেবে দুটি সনদ জমা দিয়েছেন। একটি স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে ডিপ্লোমার। অন্যটি সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া। ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক বিষয়ে বাংলাদেশে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে লেখাপড়ার সুযোগ নেই। স্নাতকের পর ছাত্রছাত্রীরা ভারত বা চীন থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি কোর্স করেন। এ ছাড়া তাঁর চার বছর চাকরির অভিজ্ঞতাও ছিল না। কাগজপত্রে দেখা গেছে তিনি মিরপুরে ইউনানি আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজে আড়াই মাস শিক্ষকতা করেছেন। মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা যায়নি।
ইউনানি ও আয়ুর্বেদিকে আবাসিক চিকিৎসক পদে চাকরির শর্ত ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিইউএমএস/বিএএমএস ডিগ্রিসহ আট বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা। নিয়োগ পাওয়া মো. আতিয়ার রহমান লেখাপড়া শেষ করেছেন ২০০৭ সালে। ইন্টার্নশিপ সনদ পেয়েছেন ২০০৯ সালে। হিসাব অনুযায়ী চাকরির আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখেও তাঁর আট বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণ হয় না। আতিয়ার বলেন, চাকরির শর্ত পূরণ হয়েছে বলেই তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
একই অভিযোগ উঠেছে রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ জহিরুল হকের ক্ষেত্রেও। তিনি আবেদনপত্রের সঙ্গে হাকিম সাঈদ ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে কাজের সনদ জমা দিয়েছেন। ওই সনদ অনুযায়ী জহিরুল ২৮ মার্চ ২০০৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রভাষক হিসেবে কাজ করেছেন। এতে তাঁর অভিজ্ঞতার সময়কাল দাঁড়ায় ছয় বছর দুই মাস। এ পদটিতেও একাধিক যোগ্য প্রার্থী ছিলেন। জহিরুল হক বলেন, একটি কুচক্রী মহল তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসক মো. আবদুস সালাম চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন ২০০৯ সালে। কিন্তু তিনি ২০০৬ সাল থেকে চিকিৎসক হিসেবে জেনিয়াল ইউনানি ল্যাবরেটরিতে এবং মণিপুর স্কুলে ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত চাকরি করেছেন বলে দেখিয়েছেন। নিবন্ধন ছাড়া চিকিৎসা দেওয়া নিষিদ্ধ হওয়া স্বত্বেও তিনি চিকিৎসা দিয়েছেন এবং ওই সময়কালকেই কাজের অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখিয়ে চাকরি পেয়েছেন। এ বিষয়ে সালাম কোনো মন্তব্য করতে চাননি।