রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ¯স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে তিন শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার বেলা ১১-১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনে ‘এফ’ ইউনিটের (অ-বিজ্ঞান গ্রুপ) পরীক্ষায় তাদেরকে আটক করে প্রশাসন। তবে জালিয়াতির দায়ে ওই ইউনিট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বহিস্কার করলেও ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে কোনো অপরাধ প্রমানিত হয়নি।বহিস্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, চাঁদপুরের লুৎফর রহমান, নাটোরের নাজমুল হুদা এবং রাজশাহীর দূর্গাপুরের মিজানুর রহমান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দফতর সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টায় দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের ৪১৬ নাম্বার কক্ষে একই বেঞ্চে বসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে চাঁদপুর থেকে আসা লুৎফর রহমান ও নাটোরের নাজমুল হুদা। তারা পরীক্ষা চলাকালে একে অপরের প্রশ্ন পত্র আদান-প্রদান করে। এসময় পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকরা প্রশ্ন ও উত্তরপত্র (ওএমআর সিট) জমা নিয়ে তাদের পুলিশে দেয়। এরপর তাদেরকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিচু তলায় অবস্থিত পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে আসা হয়।
এদিকে একই সময়ে ওই ভবনের ভবনের ৩৫৩ নম্বর কক্ষ থেকে রাজশাহী দূর্গাপর থেকে আসা মিজানুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষার মূল নিবন্ধনপত্রের ছবি পরিবর্তনের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে আটক করে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে আসা হয়। পরীক্ষার কক্ষেই তাদেরকে বহিস্কার করা হয়। পরে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার দিতে ক্যাম্পাসে অবস্থিত ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। তবে দুপুর একটা থেকে আড়াইটা ভ্রাম্যমান আদালত ওই তিন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাদ করলেও কোনো অপরাধের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা পায়নি। পরে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো অভিযোগ না করায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট মর্তুজা আল-মুইদ।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী মেজিস্টেট মর্তুজা আল-মুইদ বলেন, ওই তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ভ্রাম্যমান আদালতের আওতায় পরেনা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দেয়নি। তাই অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, তারা যে অপরাধ করেছে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওই তিন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা থেকে বহিস্কার করেছে। কিন্তু আমাদের কাছে কোনো অপরাধ প্রমানিত না হওয়ায় আটক লুৎফর রহমান ও নাজমুল হুদাকে ছেড়ে দেওয়া জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তবে নিবন্ধনপত্রের ছবি পরির্তনকারী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা করতে পারেন বলেও জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, আটককৃতদের মধ্যে লুৎফর ও নাজমুলকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ছবি বদল করা ওই নিবন্ধনপত্রটি মিজানুরের বলে দাবি করেছেন তার পরিবার। তাই এ বিষয়ে প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকেও ছেড়ে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সৌজন্যে : লেখাপড়া.কম