রসায়নের পর্যায় সারণীতে যুক্ত হয়েছে আরও চারটি নতুন মৌল, যার ফলে বিজ্ঞানের এই শাখার সব পাঠ্যবইয়ের নতুন সংস্করণ প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে।
বিশ্বে যতগুলো মৌল আবিস্কার হয়েছে তাদের ধর্ম ও সাদৃশ্যের ভিত্তিতে একই পর্যায়ভুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে এই পর্যায় সারণী।
রাসায়নিক নামকরণের পরিভাষা এবং পরিমাপ পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি (আইইউপিএসি) গত ৩০ ডিসেম্বর নতুন চারটি মৌলকে স্বীকৃতি দিয়ে এই সারণীতে স্থান দেওয়ার কথা জানায় বলে গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।
যে পদার্থকে রাসায়নিক পদ্ধতিতে বিভাজিত করলে ভিন্ন ধর্মের অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না, তাকে বলা হয় মৌলিক পদার্থ। পর্যায় সারণীতে প্রতিটি মৌলের অবস্থান ঠিক হয়েছে সবচেয়ে বাইরের স্তরের ইলেক্ট্রন সংখ্যা অনুযায়ী।
পর্যায় সারণীর ১১৮টি ঘরের মধ্যে নতুন যোগ হওয়া চারটি মৌলের কথা জানা গিয়েছিল আগেই। তবে সেগুলোর মৌল ধর্ম সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই আইইউপিএসি স্বীকৃতি দিলো।
আইইউপিএসি বলছে, রাশিয়া ও আমেরিকার একদল বিজ্ঞানী পর্যায় সারণীর ১১৫, ১১৭ ও ১১৮ নম্বর মৌল আবিষ্কারের দাবির পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছে। আর জাপানের রিকেন ইন্সটিটিউটের একদল বিজ্ঞানী প্রমাণ করেছে ১১৩ নম্বর মৌল আবিষ্কারের বিষয়টি।
এই স্বীকৃতির ফলে ‘পূর্ণতা’ পেয়েছে পর্যায় সারণীর সপ্তম পর্যায়, যাতে স্থান পাওয়া সবগুলো মৌলই তেজস্ক্রীয়।
তবে পরীক্ষাগারে সৃষ্ট এই চার মৌলের অস্থায়ী নাম ইউনানট্রিয়াম (Uut, 113); ইউনানপেন্টিয়াম (Uup, 115); ইউনানসেপ্টিয়াম (Uus, 117) এবং উনানঅক্টিয়াম (Uuo, 118)। যারা এসব মৌল আবিষ্কার করেছেন, তাদেরই চূড়ান্ত নাম ও রাসায়নিক সংকেত ঠিক করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে আইইউপিএস।
এর আগে সর্বশেষ ২০১১ সালে ১১৪ ও ১১৬ নম্বর ঘরে ইউনানকোয়াড্রিয়াম (Uuq) ও ইউনানহেক্সিয়াম (Uuh) আইইউপিএস-এর স্বীকৃতি পায়।
স্বীকৃতির খবর শুনে রিকেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রসায়নে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী রিওজি নয়োরি এক বিবৃতিতে বলেন, “বিজ্ঞানীদের জন্য এটা এমন এক আবিষ্কার, যা অলিম্পিকে স্বর্ণপদকের পাওয়ার চেয়েও বড়।”