এ খাতে সরকারের বছরে যে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ব্যয় (নতুন পে-স্কেলের হিসাব অনুসারে ৫ হাজার ৩৫৫ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫০ টাকা) হয়, তার কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই এসব সংশোধনী আনা হচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানান, এ সংশোধনীর আগে শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের অধীনে শিক্ষক নিয়োগের নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হবে। ওই নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এমপিওর নির্দেশিকার সংশোধনী জারি করা হবে। এগুলোকে প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে এবং প্রণীতব্য আইনের বিধিবিধান অনুসরণ করেই সংশোধনীটি চূড়ান্ত করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র আরো জানান, বিদ্যমান এমপিওর নির্দেশিকায় প্রতিটি স্কুলে বর্তমানে যেসব শিক্ষক এমপিওভুক্ত রয়েছেন, তার অতিরিক্ত বেশ কিছু বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার বিধান যুক্ত করা হবে। শিক্ষানীতি-২০১০-এর আলোকে মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণীতে যেসব নতুন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে সেসব বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ এবং তাদের এমপিওভুক্ত করা হবে।
বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেÑ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কম্পিউটার, চারু ও কারুকলা। এছাড়া যে বিষয়গুলোতে গুচ্ছ শিক্ষক বিদ্যমান, সেসব বিষয়েও প্রতিটির জন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগের বিধান যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রটি। এ পদগুলোতে এমপিওর নির্দেশিকায় সংশোধনী হিসেবে যুক্ত হবে। একইসঙ্গে লাইব্রেরিয়ান পদটিও এমপিওভুক্তির আওতায় আনা হবে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে গুচ্ছ শিক্ষকেরা স্কুলে বাংলা, সমাজবিজ্ঞান ও ইংরেজি বিষয়ের ক্লাস নিয়ে থাকেন। এতে শ্রেণিকক্ষে গুণগত পাঠদান কতটুকু নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা। তাই এমপিওর নির্দেশিকার সংশোধনীতে ওই প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগের বিধান যুক্ত করা হবে। বিশেষ করে ইংরেজি বিষয়ের জন্য অবশ্যই আলাদা শিক্ষক নিয়োগের বিধান রাখা হবে।
মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বিগত জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে এমপিওর নীতিমালার নির্দেশিকার সংশোধনী নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের (প্রশাসন) নেতৃত্বে পদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক, মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক শাখার যুগ্মসচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ওই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে আরো বৈঠক হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। এরপরই এসব প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করে শীর্ষ পর্যায়ের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
বিষয়ভিত্তিক নতুন শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদনের ব্যাপারে শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির প্রয়োজন হবে বলে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান।
তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার মান নিশ্চিত করতেই বিষয়ভিত্তিক এসব পদে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। এ পদগুলো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য। এজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বা সম্মতির প্রয়োজন নেই। নতুন এ পদের জন্য সরকারের ব্যয় বাড়লেও শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে এটি করা জরুরি বলে সভায় মত প্রকাশ করা হয়েছে।
অপর দিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এখন থেকে শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে নতুন নীতিমালার ও নিয়োগ কমিশনের তদারকিতেই শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। এর জন্য এনটিআরসিএর আইনের সংশোধনীর কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের উপরিউক্ত পদগুলোতে এখন আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার সুযোগ নেই বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে স্কুল কর্তৃপক্ষ এখন শুধু চাহিদা জানাবে স্থানীয় জেলা শিক্ষা অফিসকে। ওই চাহিদার আলোকে এনটিআরসিএ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। তারই ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য এমপিওভুক্ত শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এখন থেকে শিক্ষকের বয়সের একটি সীমারেখা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এমপিভুক্ত শিক্ষকদের বয়সের ক্ষেত্রে বর্তমানে