মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকল্পে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের প্রথম ও শেষ দুটি ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনাসহ পনেরটি নির্দেশনা দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি পরিপত্র জারি করেছিলো চলতি বছরের গত ১৬ মার্চ ।
যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে শিক্ষকদের জন্য ১৫টি নির্দেশনার বিষয়টি নিয়ে গতকয়েকমাসে বেশ আলোচনা চলছিলো। এবার পরিপত্রে উল্লেখিত বিষয়ের বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, সব শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসতে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গৃহীত উদ্যোগের সফলতাও পেয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রাথমিকে ভর্তির নির্দিষ্ট বয়সসীমা ৫ থেকে ১০ বছরের শিশুদের ভর্তির হার (এনইআর) প্রায় শতভাগ।’
তিনি জানান, ‘ এর চেয়ে বেশি বয়সের শিশুদের ভর্তির সংখ্যা বিবেচনায় নিলে (জিইআর) এ হার শতভাগও ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার। পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে নানা প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
এরকম অবস্থায় প্রাথমিক স্কুলে ঝরে পড়ার হার রোধ ও মানসম্মত শিক্ষা প্রদানে এই পরিপত্র জারি করা হয়েছে। যারা এসব নির্দেশনা অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
গত ১৬ মার্চ ২০১৭ মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ত্রি পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্কুলমুখী করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বেশ কয়েকটি নির্দেশনা গ্রহণ করেছে। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে ,
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্নকরণ,
ক্লাস রুটিনে প্রথম পিরিয়ড ও শেষ পিরিয়ডে প্রধান শিক্ষককে ক্লাস নিতে হবে,
শিক্ষকদের ক্লাসে প্রবেশের পূর্বে ‘লেসন প্ল্যান’ অনুযায়ী ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করা,
কন্টেন্ট বা লেসন প্ল্যান নিয়ে প্রতি সপ্তাহে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের সমন্বয়ে তা মূল্যায়ন করতে হবে,
প্রতিটি শ্রেণিতে দুর্বল শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে যত্ন নিয়ে সক্ষমতা,
শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার ব্যবস্থা, স্টুডেন্ট কাউন্সিল গঠন, শিক্ষকদের আচার-আচরণ ও ড্রেস কোড নিশ্চিতকরণ,
শিক্ষার্থীদের ড্রেস প্রদান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ,
স্বাস্থ্যগত পরামর্শ ও ফাস্ট এইড ব্যবহারসহ আনুসাঙ্গিক ১৫টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সব স্কুলগুলোকে এসব নির্দেশনা বাধ্যতামূলক অনুসরণ করার নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়গুলো জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের মনিটরিং করার নির্দেশানও দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়মিত প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ করা হয়েছে।