এতে সর্বনিম্ন গ্রেডের (গ্রেড-২০) একজন কর্মচারী সর্বোচ্চ ১২ লাখ টাকা এবং গ্রেড-১-এর একজন কর্মকর্তা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ ছাড়া ২০ জনের একটি গ্রুপ করে জমি কেনার জন্যও ঋণ দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলে। এক্ষেত্রে জমির পরিমাণ হবে সর্বনিম্ন পাঁচ কাঠা থেকে সর্বোচ্চ ২০ কাঠা। সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন ঋণের সুবিধা থাকলে জনপ্রশাসনে দুর্নীতি কমবে বলেও পে-স্কেলের সুপারিশে বলা হয়েছে।
অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলের আলোকে সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়ি করার জন্য ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করেছে।
এই কমিটি যৌক্তিকহারে বাড়ি নির্মাণ ঋণ নির্ধারণ করে সুপারিশ করবে। সেই সুপারিশের আলোকেই ঋণ দেওয়া হবে। আগামী অর্থবছরের শেষ দিকে সরকার পর্যায়ক্রমে এই ঋণ দেওয়া শুরু করতে চায় বলে সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানায়। অষ্টম পে-স্কেলে একজন সরকারি চারকরিজীবীকে ব্যাংক রেটে (৫ শতাংশ সুদে) ৬০-৮০ মাসের সমপরিমাণ সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা (গ্রেড-১) এবং সর্বনিম্ন ১২ লাখ টাকা (গ্রেড-২০) পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ১৯৯৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়ি নির্মাণ ও গাড়ি ক্রয় ঋণের টাকার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।
৩৬ মাসের মূল বেতনের সমান সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বাড়ি নির্মাণ ঋণ এবং ১২ মাসের মূল বেতনের সমান সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা গাড়ি ক্রয় ঋণ নির্ধারণ করা হয়। এ ছাড়া বাড়ি মেরামতের জন্য ১৮ মাসের বেতনের সমান সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এসব ঋণের সুদের হার ছিল ১০ শতাংশ। তার আগে ১৯৯০ সালে ২০ অক্টোবরের প্রজ্ঞাপনে গৃহনির্মাণে ২৪ মাসের মূল বেতনের সমান সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা ছিল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাড়ি নির্মাণ ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে অষ্টম পে-স্কেলের সুপারিশ কিছু বিশ্লেষণ করেছে।
এই অবস্থায় সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়ি নির্মাণ ঋণ চূড়ান্ত করার বিষয়ে উদ্যোগ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে গত মাসে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব এবং ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারকে সদস্য করা হয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন, অর্থ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, অষ্টম পে-স্কেলের সুপারিশ অনুযায়ী এই কমিটি তাদের সুপারিশ করবে। অর্থ মন্ত্রণালয় কয়েক দফায় কমিটি করেও চূড়ান্ত কিছু করতে পারেনি। তাই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন আর দীর্ঘ সময় লাগবে না।
সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আগামী অর্থবছর থেকেই এই ঋণ সুবিধা চালুর নির্দেশনা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অষ্টম বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন গতকাল সকালের খবরকে বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়ি নির্মাণ ঋণের বিষয়ে অষ্টম পে-স্কেলে সুপারিশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখন কিছু বলার নেই। অষ্টম পে-স্কেল সুপারিশ অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ৬০ থেকে ৮০ মাসের বেতনের সমান বাড়ি নির্মাণ ঋণ পাবেন। সেই হিসেবে বিভিন্ন গ্রেড অনুযায়ী ঋণের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারিত হবে।
সূত্র: কারেন্টনিউজ ডটকমডটবিডি