প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আলমগীর কালের কণ্ঠকে জানান, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য দ্বিতীয় ধাপে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগের যে প্রক্রিয়া চলছে আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি চালু করার পর প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে সহকারী শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়। মহাপরিচালক জানান, প্রথম ধাপে এ শ্রেণির জন্য সাড়ে সাত হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি-৩) আওতায় দ্বিতীয় ধাপে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আওতায় প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। নিয়োগ পেতে ৬১ জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) মোট ৯ লাখ ৭১ হাজার ৬০৮ জন আবেদন করেন। এ বিষয়ক সব কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হচ্ছে।
প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে এ ধাপেই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণ করে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন জেলায় পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন তৈরি করে সকালে অনলাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে জেলায়। সেখানে দুই ঘণ্টা আগে প্রশ্ন ছাপিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
প্রথমে সবচেয়ে কম আবেদনকারী রয়েছেন এমন পাঁচটি জেলায় পরীক্ষা নেওয়া হয় গত ২৭ জুন। এরপর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ১৭ জেলায়, ২৮ আগস্ট। এই ২২ জেলার লিখিত পরীক্ষার ফলাফল আজ প্রকাশ করা হবে। তারপর আরো ২২ জেলায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে ১৬ অক্টোবর। বাকি জেলাগুলোর পরীক্ষা ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে পারে। ২২ জেলার নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে আজ রাতে প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের অভাবে লেখাপড়া বিঘ্নিত হচ্ছে। এ সমস্যা দূর করতে প্রাথমিকে ১৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের জন্য প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের মামলার কারণে তা স্থগিত হয়ে আছে। এ ছাড়া প্রায় ২০ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। পদটি দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করার পর পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চলতি অর্থবছরের কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। গতকাল রবিবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ বছর ছয় হাজার শ্রেণিকক্ষ ও ছয় হাজার নলকূপ স্থাপন করবে। নির্ধারিত সময়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিনা মূল্যে ১১ কোটি ২০ লাখ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ; ডিজিটাইজড পদ্ধতিতে শিক্ষার জন্য ১৪ হাজার ৬৮৪টি মাল্টিমিডিয়াসহ ল্যাপটপ সরবরাহ; ৭৮ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান ও ৩২ লাখ শিক্ষার্থীকে স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আনা কর্মপরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সচিব মেছবাহ উল আলম এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে মহাপরিচালক মো. আলমগীর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
সূত্র: কালের কণ্ঠ