সাংগঠনিক দক্ষতা অনেকটা বাঙালির রক্তে মিশে আছে। নেতৃত্ব আর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে বরাবরই বাংলাদেশিরা বিদেশে নিজেদের প্রমাণ করেছে। তারই প্রমাণ রাখল অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা। কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংগঠন বলে হয়ে থাকে কার্টিন ইউনিভার্সিটি পোস্টগ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আট হাজার স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীকে প্রতিনিধিত্ব করে এই সংগঠন। এই সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখেন। উপাচার্যসহ সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিক্ষক ও প্রশাসকদের সঙ্গে সব সভা ও আয়োজনে থাকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই সংগঠনের নির্বাচনে দেখা গেল বাংলাদেশিদের জয়জয়কার। সম্প্রতি পার্থে নরমান ডাফটি লেকচার থিয়েটারে হয় এই নির্বাচন।
চারজন বাঙালি একই সঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন বিভিন্ন পদে। তার মধ্যে রয়েছেন সহসভাপতি পদে মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল হক, কোষাধ্যক্ষ পদে ফার্মেসি বিভাগের আদনান মান্নান, প্রকৌশল অনুষদের প্রতিনিধি হিসেবে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফরহাদ রাব্বি ও বাণিজ্য অনুষদের প্রতিনিধি উম্মে নুসরাত জুসি।
আমিনুল ও আদনান এর আগেও এই নির্বাচনে জয়লাভ করেন। আদনান মান্নান এই বিজয়ের পেছনে বাংলাদেশিদের মাঝে কাজ করার তাড়না ও সহজাত বন্ধুত্বসুলভ আচরণই কারণ মনে করেন।
প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি মেয়ে হিসেবে এই নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন নুসরাত। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, একজন অস্ট্রেলিয়ানকে হারিয়ে এই নির্বাচনে জেতাটা অনেকটাই দুরূহ ছিল আমার জন্য। কিন্তু আমার নির্বাচনী বক্তৃতায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও নেতৃত্ব নিয়ে আমার দেওয়া ধারণা সবাই পছন্দ করেছে। একজন বাংলাদেশি হিসেবে এই বিজয় আমার কাছে অনেক গৌরবের। উল্লেখ্য, এর আগে অন্য কোনো দেশের এতজন একই সঙ্গে এই সংগঠনের নির্বাচনে বিজয়ী হয়নি। ইতিপূর্বে অর্থনীতি বিভাগের ইফতেখার রবিন টানা তিনবার এই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। বিজয়ী চারজনই এই অবস্থানে আসার পেছনে কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে অনুপ্রেরণা মনে করেন।
বিজয়ীরা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য চালু করতে চান নতুন বৃত্তি। একই সঙ্গে আরও বেশি প্রশিক্ষণের আয়োজনের পাশাপাশি সমস্যায় জর্জরিত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চান।